জাতির জনক,৭ মার্চসহ কয়েকটি ধারা সংসদের জন্য রেখে দিয়েছেন আদালত

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বেশ কয়েকটি ধারা বাতিল করলেও অন্যগুলো বাতিল করেননি। আদালত বলেছেন, বাকিগুলোর বৈধতাও তিনি দিচ্ছেন না। সেগুলো ভবিষ্যৎ সংসদের জন্য রেখে দিয়েছেন। ভবিষ্যৎ সংসদ জাতির প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলো রাখতে পারে অথবা বাতিল করতে পারে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পৃথক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ বাতিল ঘোষণা করেন আদালত।

আওয়ামী লীগ সরকার ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে এবং সংবিধানে জাতীয় চার মূলনীতি—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনে। একই সঙ্গে তখন সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রেখে অন্যান্য ধর্মের সমমর্যাদা নিশ্চিত করার বিধান আনা হয়। পাশাপাশি ১৯৭১ সালের সাতই মার্চের ভাষণ, ছাব্বিশে মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অন্তর্ভুক্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে।

ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়।

রায়ের পর রিটকারীর আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, তারা পঞ্চদশ সংশোধনী সম্পূর্ণ বাতিল চেয়েছিলেন। আদালত বেশ কয়েকটি ধারা বাতিল করলেও অন্যগুলো বাতিল করেননি। আদালত বলেছেন, বাকিগুলোর বৈধতাও তিনি দিচ্ছেন না। সেগুলো ভবিষ্যৎ সংসদের জন্য রেখে দিয়েছেন। ভবিষ্যৎ সংসদ জাতির প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলো রাখতে পারে অথবা বাতিল করতে পারে।

সংবিধানে জাতির জনক, সাতই মার্চসহ কয়েকটি ধারা যে সংসদের জন্য আদালত রেখে দিয়েছেন তা জানিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আদালত বিষয়টি রাজনীতিবিদদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান সিদ্ধান্ত। সার্বিকভাবে তিনি রায়কে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আজ ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর, দূষণের শীর্ষে কুয়েত Sep 20, 2025
img
দেশের বাজারে স্বর্ণ ও রুপার আজকের বাজারদর Sep 20, 2025
img
ইরফান নিজেকে ‘মহান ভারতীয়’ প্রমাণ করার জন্য মিথ্যা বলেছেন : আফ্রিদি Sep 20, 2025
img
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতির কোনো স্টেকহোল্ডার না : সারোয়ার তুষার Sep 20, 2025
img
বরের সঙ্গে ছবি প্রকাশ করলেন ফারিয়া! Sep 20, 2025
img
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা পর্তুগালের Sep 20, 2025
img
অন্তর্বর্তী সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপেও সুফল মিলছে না : তাসকীন আহমেদ Sep 20, 2025
img
আফগান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে দুশ্চিন্তায় ছিলেন বাংলাদেশ কোচ Sep 20, 2025
img
ফ্রান্স ছেড়ে আলজেরিয়ার জার্সিতে খেলবেন জিনেদিন জিদানের ছেলে Sep 20, 2025
img
অবশেষে প্রেমিকের সঙ্গে পরিচয় করালেন শ্রদ্ধা কাপুর Sep 20, 2025
img
মৃত্যুর আগে শেষ বার্তায় উৎসবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কণ্ঠশিল্পী জুবিন! Sep 20, 2025
img
অস্কারের লড়াইয়ে ২৪টি সিনেমাকে হারিয়ে শীর্ষে ‘হোমবাউন্ড’ Sep 20, 2025
img
নির্বাচন বানচাল নয়, জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আমাদের আন্দোলন : হামিদুর রহমান Sep 20, 2025
img
রদ্রির ইনজুরিতে দুশ্চিন্তায় ম্যানচেস্টার সিটি Sep 20, 2025
img
নির্মাণ ব্যয় বাড়ায় নতুন ২ মেট্রোরেলে জাপানের বিকল্প ভাবছে সরকার Sep 20, 2025
img
শুরু থেকে নাও খেলতে পারে এমবাপ্পে! Sep 20, 2025
img
যাত্রাবাড়ীতে এসি বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন দগ্ধ Sep 20, 2025
img
ভুয়া এন্ট্রি দেখিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টায় ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের গ্রেপ্তার Sep 20, 2025
img
নিউজিল্যান্ডকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ভারত বধের আশায় ড্যারেন স্যামি Sep 20, 2025
img
আইন-শৃঙ্খলা ও শিল্পের জ্বালানি পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি : আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী Sep 20, 2025