নাটোরে শ্মশানঘাটের একটি ভোগঘরে চুরি ও ব্যক্তি নিহতের ঘটনায় কোনো ধরনের বাছাই ছাড়াই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রকাশ করেছে প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই)। ভুক্তভোগী সনাতন ধর্মাবলম্বী হওয়ায় সংবাদমাধ্যমটি এমনটি করেছে বলে দাবি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং ফ্যাক্টস।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) প্রেস উইং ফ্যাক্টস জানিয়েছে, শনিবার কলকাতা ইসকনের মুখপাত্র রাধারমন দাসের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওর বরাতে সংবাদ প্রকাশ করে পিটিআই। ওই সংবাদে বাংলাদেশের কোনো কর্তৃপক্ষের, হিন্দু নেতা এবং ভুক্তভোগীর স্বজনের কোনো বক্তব্য নেওয়া হয়নি। পিটিআই খবরটি প্রকাশের পর তা হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হৃষীকেশ গৌরাঙ্গ দাস বলেন, একটি ঘটনা ঘটা মাত্রই তা যাচাই বাছাই না করে সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড বলে চালিয়ে দেওয়া কোনো দায়িত্বশীল কাজ নয়। এ ধরনের অতিরঞ্জিত সংবাদ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের কারণ হতে পারে। এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের আগে মিডিয়ার স্থানীয় পর্যায়ে বা অফিসিয়াল মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, নাটোর জেলার সদর থানার বড় হরিশপুর মহাশ্মশান ঘাট থেকে শনিবার থানা পুলিশ হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তরুণ কুমার দাস (৬০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্মশান ঘাটের ভেতরে অবস্থিত ভোগঘরে অজ্ঞাতপরিচয় চোরেরা চুরি করার সময় ভুক্তভোগী তরুণ কুমার দাস চোরদের দেখে চিৎকার করার চেষ্টা করলে তার মুখ ও হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তবে শ্মশান ঘাটের ভোগঘর থেকে কয়েকটি কাসার প্লেট চুরি হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবর রহমান বলেন, শনিবার মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত যা তথ্য পাওয়া গেছে তাতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মাদকাসক্ত কিছু লোক চুরি করতে গেলে এ ঘটনা ঘটতে পারে। হত্যার সম্ভাব্য সব কারণই খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
তরুণ কুমার ইসকন বা কোনো সংগঠনের সদস্য ছিলেন না জানিয়ে, নাটোরের বড় হরিশপুর মহাশ্মশান ঘাট কমিটির সাধারণ সম্পাদক সত্য নারায়ণ রায় টিপু বলেন, তরুণ কুমার শ্মশান কমিটির কোনো সদস্য নন। তিনি কোনো পুরোহিত বা সেবক ছিলেন না। তিনি মানসিকভাবে কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ ছিলেন। এ ঘটনায় কোনো সাম্প্রদায়িক সম্পৃক্ততা আছে বলে আমাদের কাছে মনে হয় না।