সংবিধান সংস্কার কমিশন দেশের সাংবিধানিক কাঠামোতে স্থিতিশীলতা আনতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ উপস্থাপন করেছে। ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা তুলে দেন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। আর প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ করার প্রস্তাবও করা হয়েছে। এ ছাড়া নাগরিকত্ব হিসেবে ‘বাঙালি’ বাদ দিয়ে ‘বাংলাদেশি’ করার সুপারিশ করেছে কমিশন।
কমিশনের সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে, যেমন প্রধানমন্ত্রী কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা বা সংসদ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। পাশাপাশি, রাষ্ট্রপতির মেয়াদও ৪ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রপতি সর্বোচ্চ দুটি মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। এটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নেতৃত্বের প্রভুত্ব কমিয়ে জনগণের আস্থা পুনরায় স্থাপনে সহায়ক হতে পারে। নতুন নির্বাচন পদ্ধতিতে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচকমণ্ডলীর মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন, যেখানে আইনসভার সদস্য এবং জেলা-সিটি কাউন্সিল সদস্যরা ভোট প্রদান করবেন।
কমিশন জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল - এনসিসি গঠনের সুপারিশ করেছে, যার সদস্যরা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা, সংসদ স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, এবং অন্যান্য সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিরা হবে। এটি রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা এবং ভারসাম্য রক্ষা করবে।
কমিশন আরও সুপারিশ করেছে, সংসদ ভেঙে গেলে বা আইনসভার মেয়াদ শেষ হলে, একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে, যার প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, যিনি এনসিসির সিদ্ধান্তে নিয়োগ পাবেন। এই সুপারিশগুলোর বাস্তবায়নে দেশে আরও কার্যকর সরকার গঠন সম্ভব হবে এবং রাজনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার একটি উপায় হবে।
টিএ/