দেশব্যাপী জেলায় জেলায় বুলডোজার কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে ছাত্র-জনতার ব্যানারে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রথমে রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ দিয়ে শুরু হয় এই কর্মসূচি। এরপর তা অন্যান্য স্থানেও ছড়িয়ে পড়ে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে এই ভাঙচুর কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার ৫ নম্বর সড়কে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সুধা সদন পুরোপুরি খালি ছিল।
খুলনায় শেখ বাড়িখ্যাত ভবন গুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। শেখ হাসিনার চাচাতো পাঁচ ভাইয়ের বাড়ি এটি। যশোরে সাতটি স্থানে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে। সিলেটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত শেখ মুজিবের ম্যুরাল এক্সকাভেটর দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে ।
চট্টগ্রামেও শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও নগরীর জামাল খান এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেন।কুষ্টিয়াতে এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ি।
ছাত্র-জনতার ব্যানারে বরিশালে শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের ও আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর বাসভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়। নাটোরে সাবেক এমপি শফিকুল ইসলামের শিমুলের বাড়িতেও আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শেখ পরিবারের সদস্যদের নামের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি বিভিন্ন নাম ফলক খুলে ফেলা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম ফলক ভেঙে ‘বিজয়-২৪’ নাম দেয়া হয়। মুছে ফেলা হয়, ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা হলসহ ক্যাম্পাসজুড়ে মুজিব পরিবারের নামের বিভিন্ন গ্রাফিতি আর দেয়াল লিখন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ভেঙে ফেলা হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে থাকা স্থাপনা। মুছে ফেলা হয়েছে বিভিন্ন গ্রাফিতি। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের নামের বিভিন্ন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কারমাইকেল কলেজসহ শহরজুড়ে বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয় ছাত্র-জনতার ব্যানারে।
ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মুজিব মুর্যাল’ গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া, ভাঙচুর করা হয়েছে নগরের সার্কিট হাউস মাঠ সংলগ্ন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনাতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
এছাড়া, ছাত্র জনতার ব্যানারে যশোরের অন্তত ৭টি জায়গায় ভাঙা হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। কিশোরগঞ্জ, দিনাজপুর, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলার ভাঙচুর আর মশাল মিছিল করা হয়েছে।
টিএ/