কাজের লোক ভুয়া চিকিৎসকের সার্টিফিকেটে চাকরি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে। বাংলাদেশে দুর্নীতি কোন স্তরে পৌঁছেছে সে প্রসঙ্গ টেনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একথা বলেন। বাংলাদেশ দুর্নীতির অনেক গভীরে ঢুকে গেছে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দুর্নীতি সব শেষ করে দিচ্ছে। এটা থেকে বের হতে না পারলে বাংলাদেশের কোনো গতি নেই।
১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। সম্প্রতি আরব আমিরাত সফরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তিনি বলেন, সফরকালে আমিরাতের শীর্ষ ব্যক্তিরা বলেছিলেন, "তোমাদের কোনো ডকুমেন্ট আমরা বিশ্বাস করতে পারি না, সব ভুয়া। এক কাজের লোক, ডাক্তার হিসেবে সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছে, কিন্তু আমরা দেখতেই পাচ্ছি, সে ডাক্তার হতে পারে না।" এসব শুনে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যা প্রধান উপদেষ্টার।
এদিকে মানব পাচার বিষয়ে তিনি বলেন, মানব পাচার বিভৎস বিষয়। আমাদের মেয়েরা যাচ্ছে, কি অবস্থায় ফিরে আসছে, যদি সশরীরে ফিরে আসতে পারে। কত লাশ কোথায় চলে যাচ্ছে সেটারও কোনো হিসেব নেই। এই কোন দেশ বানালাম আমরা!
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে দুর্নীতি মুক্ত হতে সহায়তা করতে আগ্রহী জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও চায় আমরা দুর্নীতি মুক্ত হই। কারণ দুর্নীতি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুই চলছে না।
দুর্নীতি থেকে বের করার ক্ষেত্রে অনলাইন কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা যে জায়গাগুলোতে অনলাইন ব্যবস্থা আছে সেগুলো পুরোপুরি কার্যকর করার নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাকিত সহায়তার কারণে এগুলো তৈরি হয়েছে কাজে লাগানো হয়নি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরো বলেন, এই আবেদন করবো, আমরা থাকা অবস্থায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অনলাইন সার্ভিস, যেগুলো তৈরি আছে, ভবিষ্যতে যেগুলো তৈরি হবে সেগুলোর কথা বলছি না, যেগুলো তৈরি আছে সেটা শতভাগ যেন আমরা বাস্তবায়ন করে যেতে পারি।
দুর্নীতির কারণে বিশাল সম্ভবনা বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারছে না মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সামনে বিশাল জগৎ, শুধু আমাদের সিদ্ধান্ত এবং কর্মসূচিগুলো ঠিক করার অপেক্ষায়। এই যে এত বড় সুযোগ আমাদের আছে, এবং এগুলো বাস্তবায়ন হবে এগুলো নিয়ে আমাদের চিন্তা নাই।