এনআইডি সংশোধন, শেষই হচ্ছে না ভোগান্তির গল্প

ভুক্তভোগী ৬০ বছর বয়সী রজব আলী। প্রকৃত বয়স বেশি হলেও জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সুবাদে প্রায় ২৪ বছর কম। ভুলের মধ্যে আর থাকতে চান না তিনি। নিজের বয়স বাড়াতে এক বছর ধরে আসা যাওয়া করছেন সুদূর লালমনিরহাট জেলা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে।

সম্প্রতি আবারো এনআইডি সংশোধনের খোঁজ নিতে রজব আলী আসেন নির্বাচন ভবনে। নাম এন্ট্রি করে চলে যাওয়ার দেড় ঘণ্টার মাথায় অচেনা এক নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হয়, ২৫ হাজার টাকা দিলে সংশোধন হতে পারে তার এনআইডি। তবে পরে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

রজব আলীর মতো দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল সংশোধন করতে নির্বাচন ভবনে আসছেন বহু মানুষ।

এনআইডি সংশোধন করতে নাগরিক ভোগান্তির গল্প নতুন নয়। অনেকক্ষেত্রে নতুন একটি এনআইডি পাওয়ার থেকেও সংশোধনীতে বেগ পোহাতে হয় অনেক বেশি।

তবে কার ভুলে এই ভোগান্তি, বিষয়টির অনুসন্ধানে নাগরিক ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) দুই পক্ষের অবহেলাই পাওয়া যায়।

এদিকে ভোগান্তি কমাতে এনআইডি সংশোধনে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অনেক নাগরিকের দণ্ডনীয় অপরাধ উপেক্ষা করছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।

কেউ কেউ আবার দায় চাপান ইসির ওপর, কিন্তু নিজেই ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে এনআইডি করেছেন বা সংশোধন করতে এসেছেন। এদিকে ক্র্যাশ প্রোগ্রামেও প্রত্যাশা অনুযায়ী পেন্ডিং আবেদন নিষ্পত্তি করতে পারেনি ইসি।

এ অবস্থায় এনআইডি সেবায় গতি আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হূমায়ুন কবীর বলেন, যারা অবৈধ এবং অসত্য তথ্য দিয়ে এনআইডি পরিবর্তন করতে চান, সে সব ক্ষেত্রে ভোগান্তি বেশি। কারণ এসব তথ্য জাস্টিফাই করা যায় না। এসব ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও ভোগান্তি কমাতে চাইলে এনআইডি সেবাকে সহজীকরণের পাশাপাশি নাগরিকদের মানসিকতারও পরিবর্তন করতে হবে।

এনআইডির ভুল তথ্য সংশোধনে হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে প্রতিদিনই। ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট আবেদন জমা পড়েছে চার লাখ সাত হাজার।

Share this news on: