আমাদের ওপর আক্রমণ করবেন না, কাজ করতে দেন: আইজিপি

আমাদের কাজ করতে দেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি বলেন, অনুগ্রহ করে আমাদের ওপর আক্রমণ করবেন না। আমরা তো সমাজ এবং দেশেরই লোক। কীভাবে সমাজে স্থিরতা আসবে, কীভাবে আমরা নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনের দিকে যাব, আমরা যদি আস্থা না আনতে পারি। আমাকে কেন কাজ করতে দিচ্ছেন না? এটা তো টোটালি যুক্তিহীন একটা কাজ। এতদিন পর এখন তো আর আবেগতাড়িত হওয়ার কিছু নেই। পুলিশ তো মানুষের শত্রু নয়। এই জায়গাটায় দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করি আমাদের কাজ করতে দেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সকাল ১০টায় গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় শিল্প পুলিশ-২ এর ইউনিটের বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর আমাদের কী অবস্থা ছিল আপনারা জানেন। আমাদের কিছু সদস্য যারা মোস্টলি সিনিয়র অফিসার তাদের অতিউৎসাহ ও রাজনৈতিক আনুগত্যের জন্য পুরো পুলিশ কলঙ্কিত হয়েছে। সারা বিশ্ব এখন বলে যে, বাংলাদেশ পুলিশ তারা এত নির্মম কীভাবে হলো?

বাহারুল আলম বলেন, যখন কোনো পুলিশ সদস্য কিছু করে, তখন অবশ্যই এর দায়ভার আমার ওপর এসে পড়ে। আমার আত্মীয়স্বজনরা বলেন, তোমরা এগুলো (ছাত্র-জনতার আন্দোলন) কি করেছো? আসলে আমাদের যা করার কথা ছিল আমরা কিছুই করিনি বরং আমরা মানুষের বিরুদ্ধে গিয়েছি। এটা কিছুসংখ্যক পুলিশ সদস্যের উচ্চাভিলাষ এবং অন্যায় রাজনৈতিক আনুগত্যের জন্য হয়েছে। এর জন্য আমাদেরকে জীবন দিতে হয়েছে। এই দায়ভার যিনি জীবন দিয়েছেন তার নয়। এই দায়ভার যিনি অর্ডার করেছেন তার, তাকে অবশ্যই পানিশমেন্ট পেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ আগে আমাদেরকে যেভাবে দেখেছে হঠাৎ করে তারা আমাদেরকে বন্ধু মনে করবে না। এজন্য আপনারা প্রতিদিন মূল্য দিচ্ছেন। এখনো পুলিশ কাজ করতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হচ্ছে। আসামি ছিনিয়ে নিচ্ছে, ট্রাফিক পুলিশকে মানছে না, চড়াও হচ্ছে। আইন না মানার একটা প্রবণতা চলে আসছে কেন? কারণ তারা মনে করছে যে, তারা পুলিশেরই কাজ করছে। তাই পুলিশ লাগবে না। কিন্তু একটি সভ্য দেশ পুলিশ ছাড়া কীভাবে চলে? পৃথিবীর কোথায় আছে পুলিশ ছাড়া চলে? পৃথিবীর কোথাও তো নেই। এই দেশের মানুষকে বুঝতে হবে, যারা বুদ্ধিমান তারা অবশ্যই বুঝেন। দেশের অপরাধ যদি দমন করা না হয়, শৃঙ্খলা যদি না হয়, কোনো নাগরিক থাকতে পারবে? এই ১৮ কোটি লোকের একজনও কি ঘুমাতে পারবে? আপনারা তো খেয়াল করেছেন, যখনই অপরাধ ঘটে তখন কি রকম শুরু হয়। তখন রাত জেগে নিজেদের পাহারা দিতে হয়। এই দায়িত্বটা তো আমাদের। এখন আমাকে যদি এই দেশের কিছু লোক ভুল বুঝে এবং দায়িত্ব প্রদান করতে না দেয় তাহলে পুরো সোসাইটি সমস্যায় পড়বে।

শিল্প পুলিশের এডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল মো. ছিবগাত উল্লাহর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন, গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল করিম খান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ডিআইজি ইসরাইল হাওলাদার, গাজীপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম।

আরএইচ/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রোনালদোর রেকর্ড, অল্পের জন্য বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হলো না পর্তুগালের Oct 15, 2025
img
১৬ বছর পর আবারও ফিফা বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা Oct 15, 2025
img
পাবলিক ইস্যু রুল-২০১৫ রহিত করে নতুন নীতিমালার খসড়া অনুমোদন Oct 15, 2025
img
চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল ছাত্রদল নেতার Oct 15, 2025
img
মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে দেবে বিএনপি Oct 15, 2025
img
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে চূড়ান্ত জুলাই সনদ Oct 15, 2025
img
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড Oct 15, 2025
img
মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে দেবে জামায়াত Oct 15, 2025
img
চাকসু নির্বাচন আজ Oct 15, 2025
img
২০০ রানে হেরে আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ টাইগাররা Oct 15, 2025
img
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়াল ৩২ বিলিয়ন ডলার Oct 15, 2025
img
রোম সফর শেষে দেশের পথে ড. মুহাম্মদ ইউনূস Oct 15, 2025
img
শ্রীলঙ্কান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন বিমসটেক মহাসচিব Oct 14, 2025
img
হাসপাতালে ভর্তি বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান Oct 14, 2025
শহীদ মিনারে শিক্ষকদের ঢল, শুরু ‘মার্চ টু সচিবালয় Oct 14, 2025
আর অপেক্ষা নয়; সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার ঘোষণা শিক্ষকদের Oct 14, 2025
আন্তর্জাতিক মঞ্চে মেলোনি-এরদোগানের প্রফুল্ল মুহূর্ত Oct 14, 2025
ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থীকে স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থীর সমর্থন; যা বললেন এষা Oct 14, 2025
img
বান্দরবান সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে প্রাণ গেল মিয়ানমারের নাগরিকের Oct 14, 2025
img
মুক্তি পেল নাদিমের ‘একটি জোড়া হলুদ পাখী’ Oct 14, 2025