ভুলে যাওয়া একটি নিঃশব্দ ঘাতক রোগ

আলঝেইমারস রোগ হলো মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত নিঃশব্দ ঘাতক রোগ। সচরাচর আলঝেইমারস ডিজিজ থেকেই ডিমেনশিয়া সবচেয়ে বেশি হয়। ১৯০৬ সালে জার্মান নিউরোলজিস্ট (ব্রেইন বিশেষজ্ঞ) অ্যালিয়স আলঝেইমারস্ সর্ব প্রথম আলঝেইমারস রোগটি আবিষ্কার করেন। এটি একটি শারীরিক রোগ। আলঝেইমারস একটি অগ্রগতিশীল রোগ। অর্থাৎ সময় চলার সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে ব্রেইনের আরও অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে।

আলঝেইমারস অথবা ডিমেনশিয়ার প্রধান লক্ষণ নিম্নরূপ :

স্মৃতিশক্তি লোপ : সাময়িকভাবে স্মৃতিলোপ পায়, যা স্বাভাবিক কর্মক্ষমতার ব্যাঘাত ঘটায়। যেমন, চেনা মানুষের নাম, চেনা মুখ, জায়গার নাম, পরিচিত টেলিফোন নম্বর ইত্যাদি ভুলে যাওয়া।
প্রতিদিনের কাজের বিভ্রান্তি : প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজ করতে গিয়ে করতে না পারা। যেমন : রান্না করা, বাতি জ্বালানো, টিভি চালানো এবং সাধারণ হাটবাজারের হিসাব-নিকাশ করতে না পারা ইত্যাদি।

ভাষাগত সমস্যা: শিশুদের মতো এলোমেলো করে বাক্য বা যা অনেক সময় বোধগম্য হয় না।

সময় ও স্থান চিহ্নিত করতে অপারগ : সময়জ্ঞান না থাকা। সকাল, বিকাল ও রাত বুঝতে না পারা। হারিয়ে যাওয়া বা রাস্তা হারিয়ে অন্যখানে চলে যাওয়া, বাড়ির রাস্তা খুঁজে না পাওয়া।
বিচার-বিবেচনার ক্ষমতা কমে যাওয়া : নিজের অবস্থানে থেকে কী কাজ করতে হবে তা অনেক সময় বুঝতে না পারা। যেমন : কোন অবস্থায় কী পোশাক পরবে বা রিকশায় উঠে কত ভাড়া দিতে হবে তা বুঝতে না পারা।

জিনিসপত্র হারিয়ে ফেলা : নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র অদ্ভুত সব জায়গায় রেখে তা বেমালুম ভুলে যাওয়া।

মেজাজ ও আচার-আচরণে পরিবর্তন : যখন তখন মেজাজ পরিবর্তন হওয়া। খিটখিটে, রাগান্বিত হওয়া, দুর্ব্যবহার করা ইত্যাদি।

ব্যক্তিত্ববোধের পরিবর্তন : বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক, তবে ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে তা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। যেমন- অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা, সন্দেহ প্রবণতা বা

দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং সে ক্রমেই ব্যক্তিত্ব হারিয়ে ফেলেন।

কী ধরনের লোকদের হয় : ডিমেনশিয়া প্রধানত বৃদ্ধ লোকদের হয়। সাধারণত ৬৫ থেকে ৮৫ বছর বয়সের মানুষ ডিমেনশিয়ায় ভোগেন। তবে কম বয়সের লোকদেরও তা হতে পারে।

পুরুষ বা মহিলা যে কারও ডিমেনশিয়া হতে পারে। বিজ্ঞানীরা ডিমেনশিয়ার সঙ্গে বংশগত সম্পর্ক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। দেখা যাচ্ছে, কিছু বিরল ক্ষেত্রে ডিমেনশিয়ার জন্য দায়ী রোগগুলো বংশগত হতে পারে। বংশগত গাঠনিক প্রক্রিয়ার কারণে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
এফপি/এস এন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সাত কলেজ নিয়ে যৌক্তিক সমাধান আসবে : ইউজিসি চেয়ারম্যান Mar 25, 2025
img
হান্নান মাসউদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানালেন হাসনাত Mar 25, 2025
img
হান্নান মাসউদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ Mar 25, 2025
img
হান্নানের উপর হামলার ঘটনায় মাঝরাতে মুখোমুখি অবস্থানে দুপক্ষ Mar 25, 2025
img
বিপদে সবাই ঐক্য চায়, উতরে গেলে ভুলে যায় : নুরুল হক নুর Mar 25, 2025
img
জন্মদিনে বন্ধু তামিমের জন্য দোয়া চাইলেন সাকিব Mar 25, 2025
img
‘দেশটা কারো বাপের না’- এ কথা সাবধানে বলবেন : মির্জা আব্বাস Mar 24, 2025
img
মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় এগোতে চায় সরকার : প্রধান উপদেষ্টা Mar 24, 2025
img
কুমড়া ফুলের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা Mar 24, 2025
img
হাত-পা বেঁধে গৃহবধূকে গণধর্ষণ Mar 24, 2025