এরদোয়ানের গদি বাঁচিয়ে দিবেন ট্রাম্প?

কঠিন এক সময় পার করছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। দুই দশক শক্ত হাতে আঙ্কারাকে শাসন করেছেন তিনি। ক্ষমতার চেয়ার আগলে রাখার জন্য কখনো হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, আবার কখনো হয়েছেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু এই সময়ে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ক্ষমতায় টিকে গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে বেশ চাপের মুখে পড়েছেন তুরস্কের ৭১ বছর বয়সী এই লৌহমানব।

আগামী নির্বাচনে এরদোয়ান হেরে যেতে পারেন বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। তবে হার মানতে নারাজ তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়ার মাধ্যমে ক্ষমতাটাকে আরও দীর্ঘমেয়াদি করার পরিকল্পনা করছেন এরদোয়ান। কিন্তেু পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর ইস্তানবুলের মেয়র একরাম ইমামোগলু।

ইস্তানবুলের মেয়র নির্বাচনে দুই দফা এরদোয়ান সমর্থিত প্রার্থীকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছেন এই ইমামোগলু। শেষমেশ ঘোষণা দেন- এরপর প্রেসিডেন্ট পদে এরদোয়ানের বিপক্ষে দাঁড়াবেন জনপ্রিয় এই রাজনীতিবিদ। যে খবরে নড়েচড়ে বসেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। ওই ঘোষণার কিছু দিনের মধ্যেই দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয় ইমামোগলুকে।

ইমামোগলুকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ইস্তানবুলের রাস্তায় নেমে পড়েন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। এই ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা উল্লেখ করেন তারা। জানান, ইমামোগলুকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যাবেন এই আন্দোলন। 

স্থানীয় সময় বুধবার টানা সপ্তম দিনের মতো ইস্তানবুলের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়ে গেছেন আন্দোলনকারীরা। দিন দিন বাড়ছে এই বিক্ষেভের পরিসর। রাজধানী আঙ্কারাসহ তুরস্কের বিভিন্ন শহরেও ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভের দাবানল। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাকে গণঅভ্যুত্থানের লক্ষণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ধারণা করা হচ্ছে- এরদোয়ানের ক্ষমতায় থাকাটা এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যাচ্ছে।

তবে, বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, ইমামোগলু ইস্যুতে এরদোয়ানের ওপর তেমন কোনো চাপ নেই। এই ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ ছাড়া তেমন উচ্চবাচ্য করছে না যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। ফলে, মনে হচ্ছে নড়বড়ে হয়ে যাওয়া এরদোয়ানের গদিটা একপ্রকার বাঁচিয়েই দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ন্যাটোভুক্ত দেশ হওয়ার পরও রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন এরদোয়ান। এ জন্য বিগত বাইডেন প্রশাসন তার ওপর ছিল কঠোর। কিন্তু সেই কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ, ট্রাম্প নিজেও রাশিয়ার বিষয়ে নমনীয়। ফলে, এরদোয়ান হটানো কিংবা তাকে চাপ দেওয়ার পরিবর্তে নীরব থাকছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তার এই নীরবতাই বাঁচিয়ে দিচ্ছে এরদোয়ানের গদি।

এসএন 

Share this news on: