ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে পতন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন শুল্কনীতির প্রভাবে বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন শুরু হয়েছে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে, আজ শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকালে এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোতে ব্যাপক পতন দেখা গেছে। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ১.৮ শতাংশ কমে গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক প্রায় ১ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার এএসএক্স ২০০ সূচক ১.৪ শতাংশ কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারেও বৃহস্পতিবার বড় ধরনের ধস দেখা গেছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৪.৮ শতাংশ পড়ে গেছে, যার ফলে বাজার থেকে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্য হারিয়েছে। ডাও জোন্স সূচক ৪ শতাংশ এবং প্রযুক্তি শেয়ারভিত্তিক নাসডাক ৬ শতাংশ কমে গেছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে বিক্রির ঢল অব্যাহত রয়েছে।


নতুন শুল্কনীতিতে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে গড় শুল্ক ৫৪ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, এই নীতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বাড়বে এবং দেশীয় শিল্প সুরক্ষা পাবে। তবে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে ভোক্তাপণ্যের দাম বাড়বে এবং সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হবে।


গতকাল বৃহস্পতিবার নাইক, অ্যাপল এবং টার্গেটের মতো বড় মার্কিন কোম্পানির শেয়ারদাম ৯ শতাংশের বেশি পড়ে যায়। ট্রাম্পের ঘোষণার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীন পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নিজেদের বাজার রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বিনিয়োগ স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।


বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) গভীর উদ্বেগ জানিয়ে জানিয়েছে, এই শুল্কনীতি বিশ্ববাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে এবং চলতি বছরে বৈশ্বিক বাণিজ্য ১ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।


বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় আস্থা কমিয়ে দেবে এবং মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়াবে। ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় চিড় ধরতে পারে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

আরএ/টিএ

Share this news on: