ইরানকে একা ভাবার ভুল করবেন না, রাশিয়ার কড়া হুঁশিয়ারি

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছে। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের সহিংসতার পর এবার তাদের নজর ইরানের দিকে, আর সেই পরিকল্পনায় নেতৃত্বে থাকবে ইসরাইল—এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই ঘোষণার জবাবে রাশিয়া কড়া বার্তা দিয়ে জানিয়েছে, “ইরান একা নয়।”

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের মিত্রতার ফলে অঞ্চলজুড়ে যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে ইয়েমেনে শুরু হওয়া হামলা এখন ট্রাম্পের অধীনে নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মূল লক্ষ্য—ইরানকে চাপে রাখা, যার মাধ্যমে স্বাধীনতাকামী ও প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দমন করা।

১২ এপ্রিলের নির্ধারিত কূটনৈতিক বৈঠকের আগে হঠাৎ ট্রাম্পের সামরিক হুমকি অনেককে ভাবিয়ে তুলেছে—এটি কি প্রকৃত আলোচনার অংশ, না কি ইরানকে চাপে রাখার কৌশল?

ওভাল অফিস থেকে ট্রাম্প বলেন, “ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা প্রয়োজন হলে, আমরা নেব। এই পদক্ষেপে ইসরাইল ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকবে। কিন্তু আমাদের ওপর কেউ কর্তৃত্ব করবে না।”

এই বক্তব্যের সমর্থনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেক্সেদও জানান, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনে বাধা দিতে প্রতিরক্ষা বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে, যদিও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশা করছে তারা।

ইতিমধ্যে ভারত মহাসাগরের দিয়াগো গার্সিয়া দ্বীপে ছয়টি ‘স্টিল বিটু’ বোমার মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বোমারু বিমানগুলো ভূগর্ভস্থ লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে সক্ষম। ইরানের ভূগর্ভস্থ সামরিক ও পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোকেই টার্গেট করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজা, লেবানন ও ইয়েমেনে টানাপোড়েনের মধ্যেই ইরানে হামলার আশঙ্কা বাড়ছে। তবে রাশিয়া ও চীন যৌথভাবে ইরানের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। ইরানও রাডার ফাঁকি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানের গতিবিধির ভিডিও প্রকাশ করে শক্তি প্রদর্শন করেছে এবং প্রস্তুত রেখেছে ড্রোনবাহী রণতরী ‘শহীদ বাহমান বাকেরী’।

সৌদি আরব, কাতার, আমিরাত ও কুয়েত ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তাদের আকাশসীমা ইরানে হামলার জন্য ব্যবহার করতে দেবে না যুক্তরাষ্ট্রকে। এ অবস্থায় কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে সৌদি সফরে গেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

সব মিলিয়ে ট্রাম্পের হুমকি, ইসরাইলের আগ্রাসী নীতি এবং রাশিয়া-ইরানের পাল্টা অবস্থান এক ভয়াবহ সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বিশ্ব শক্তিগুলো আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে পায় কি না।


এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ Dec 15, 2025
img
পুলিশের পোশাকে জামায়াত প্রার্থীর পথসভায় বক্তব্য দেওয়ায় এএসআই বরখাস্ত Dec 15, 2025
img
ডিসেম্বরের ১৩ দিনেও কোনো রেমিট্যান্স আসেনি দেশের ১০ ব্যাংকে Dec 15, 2025
img
কলম্বিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল অন্তত ১৭ জনের, আহত ২০ Dec 15, 2025
img
স্বর্ণ কিনবেন? জেনে নিন আজকের বাজারদর Dec 15, 2025
img
৩ দাবিতে আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা ডাকসুর Dec 15, 2025
img
রাজধানী ঢাকায় কমবে দিনের তাপমাত্রা Dec 15, 2025
img
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি, কমেছে দাম Dec 15, 2025
img
অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুক হামলার ঘটনায় প্রাণহানি বেড়ে ১৬ Dec 15, 2025
img

চানখারপুলে ছয় হত্যা

হাবিবুর রহমানসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু আজ Dec 15, 2025
img
ওসমান হাদির ঘটনায় মেহেরপুর সীমান্তে বিজিবির নিরাপত্তা জোরদার Dec 15, 2025
img
এমবাপে ও রদ্রিগোর গোলে আলাভেসের বিপক্ষে স্বস্তির জয় রিয়াল মাদ্রিদের Dec 15, 2025
img
এলাকার উন্নয়নে ঐক্যের আহ্বান হাবিবুর রশিদ হাবিবের Dec 15, 2025
img
শব্দদূষণকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে: রিজওয়ানা হাসান Dec 15, 2025
img

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

হলান্ডের জোড়া গোলে ক্রিস্টাল প্যালেসকে বড় ব্যবধানেই হারাল ম্যানচেস্টার সিটি Dec 15, 2025
img
আজ ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হবে সিঙ্গাপুর Dec 15, 2025
img
১৫ ডিসেম্বর: ইতিহাসের এই দিনে আলোচিত যত ঘটনা Dec 15, 2025
img

বুন্ডেসলিগা

টেবিলের তলানির দলের বিপক্ষে কোনোমতে হার এড়াল বায়ার্ন মিউনিখ Dec 15, 2025
img
ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রবাসীদের দেশ গড়ায় অবদান রাখার আহ্বান Dec 15, 2025
img
সিডনির ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন মুসলিম ফল ব্যবসায়ী Dec 15, 2025