লেবাননে হিজবুল্লাহর অধিকাংশ সামরিকঘাঁটি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর

দক্ষিণ লেবাননের হিজবুল্লাহ-নিয়ন্ত্রিত অধিকাংশ সামরিকঘাঁটি এখন লেবানন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে শনিবার হিজবুল্লাহঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।

২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময়ের সংঘর্ষ—এর মধ্যে দুই মাসের পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ—শেষে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী, দক্ষিণ লেবাননে কেবল জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী ও লেবাননের সেনাবাহিনী অবস্থান করতে পারবে।

চুক্তিতে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহকে তাদের দক্ষিণাঞ্চলের সামরিক অবকাঠামো ভেঙে ফেলা এবং যোদ্ধাদের লিটানি নদীর উত্তরে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়, যেটি ইসরাইলি সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে।

সূত্রটি জানিয়েছে, ‘লিটানি নদীর দক্ষিণে হিজবুল্লাহর ২৬৫টি সামরিক অবস্থান চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১৯০টি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

চুক্তি অনুযায়ী, ইসরাইলকে ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে লেবানন থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছিল। তবে তারা ‘কৌশলগত গুরুত্বসম্পন্ন’ পাঁচটি অবস্থানে এখনও সেনা রেখে দিয়েছে। ইসরাইল দাবি করে, তারা লেবাননে এখনও হিজবুল্লাহর অবকাঠামো ও সদস্যদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক উপপ্রতিনিধি মরগান ওরতাগুস এক সপ্তাহ আগে লেবানন সফরে এসে দেশটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা করেন বলে এক লেবাননি কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

লেবাননের এলবিসিআই টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওরতাগুস বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির শর্ত পূরণে আমরা সরকারকে চাপ দিয়ে যাচ্ছি, যার মধ্যে হিজবুল্লাহ ও সব সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টিও রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এটি যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন হওয়া উচিত।’

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি কমিটি যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে, যেখানে ফ্রান্সও সদস্য।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হামাস যখন গাজা থেকে ইসরাইল আক্রমণ করে, তখন হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে উত্তর ইসরাইল লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া শুরু করে।

বহুমাসের সীমান্ত সংঘর্ষ গত সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে পরিণত হয়, যেখানে হিজবুল্লাহ মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে বলে জানা যায়। লেবানন সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘাতে চার হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

এফপি/এস এন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন ১, ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার Apr 14, 2025
img
হৃদয় ইস্যুতে যা বললেন আম্পায়ার্স কমিটির প্রধান Apr 14, 2025
img
শোভাযাত্রার শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মেট্রোরেলের ২ স্টেশন বন্ধ Apr 14, 2025
img
গদা হাতে ইউভান! নয়া রূপে শুভশ্রীর বীর Apr 14, 2025
img
কথায় কথায় কান্না করার ব্যাখ্যা দিলেন বারিশা হক Apr 14, 2025
img
শোভাযাত্রায় রয়েছে ‘পানি লাগবে পানি’ মোটিফ Apr 14, 2025
img
শোভাযাত্রায় ১৮ হরিয়ানা ঘোড়া নিয়ে ডিএমপির অশ্বারোহী দল Apr 14, 2025
img
মার্কিন মুলুকে হৃতিকের অনুষ্ঠান ঘিরে বিতর্ক, আয়োজকের সাফাই Apr 14, 2025
img
প্রতিদিন গড়ে ১১১ মিনিট হাঁটলেই ১১ বছর আয়ু বাড়বে! দাবি ব্রিটিশ বিজ্ঞান পত্রিকার Apr 14, 2025
img
সিঙ্গাপুর থেকে অনলাইনে আদালতে সাক্ষী দিলেন প্রবাসী Apr 14, 2025