ভিসা পেয়েও মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা প্রায় ১৮ হাজার শ্রমিকের সমস্যা সমাধানে দেশটির সরকারসহ সব অংশীজনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে কুয়ালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে নির্দেশনা দিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন।
গতকাল শনিবার সরকারি সফরে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে কুয়ালালামপুরে যাত্রাবিরতিকালে পররাষ্ট্রসচিব হাইকমিশন পরিদর্শন করেন এবং হাইকমিশনে দেওয়া বক্তব্যে এই নির্দেশনা দেন।
পররাষ্ট্রসচিব জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। হাইকমিশনের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি মিশনের কর্মকর্তাদের দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির পাশাপাশি দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক নিবিড়করণ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, প্রবাসীদের কল্যাণ এবং জনকূটনীতির ওপর জোর দেওয়ার নির্দেশনা দেন।
ঢাকায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইনভেস্টমেন্ট সামিটের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসার পথ এখন সুগম হয়েছে।
মালয়েশিয়ার সঙ্গে বিদ্যমান ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বাংলাদেশ আসিয়ানের সেক্টোরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং এ লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। মালয়েশিয়া এ বছর আসিয়ানের সভাপতি বিধায় এ বিষয়ে অত্র হাইকমিশনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।
পাসপোর্ট বিতরণসহ অন্যান্য সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের সঙ্গে সংবেদনশীল আচরণ এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে সেবার মান উন্নয়নে সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়ার জন্য তিনি নির্দেশনা দেন। এ প্রসঙ্গে জসীম উদ্দিন আরও বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এমআরপি পুরোপুরি বাতিল করে ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সদয় নির্দেশনা রয়েছে।
উক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে মিশনকে সব প্রস্তুতি গ্রহণের পরামর্শ দেন পররাষ্ট্রসচিব।
মালয়েশিয়ায় প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যান নিশ্চিতকরণ এবং বাংলাদেশিদের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিকে এই মিশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বলে উল্লেখ করে তিনি এক্ষেত্রে মিশনের তৎপরতা বাড়াতে বলেন। প্রবাসীদের সুবিধার্থে কুয়ালালামপুরের বাইরে বাংলাদেশি প্রবাসী অধ্যুষিত কয়েকটি শহরে কনস্যুলেট জেনারেল অফিস খোলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান পররাষ্ট্রসচিব।
পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, বিদেশের দূতাবাসগুলোর সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ এবং জবাবদিহিতা বৃদ্ধির জন্য সব দূতাবাস ও হাইকমিশনকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং ও মূল্যায়ন সংক্রান্ত ড্যাশবোর্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, কুয়ালালামপুরে হাইকমিশনে জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মিশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততা, নিষ্ঠা এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন এবং টিম- স্পিরিট নিয়ে কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।
মতবিনিময় শেষে পররাষ্ট্রসচিব মিশনের নতুন ভবনের বিভিন্ন কক্ষ এবং নির্মানাধীন সেবাকেন্দ্রসমূহ ঘুরে দেখেন।
এফপি/এস এন