মাইক্রোসফট ও গুগলের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরা সম্প্রতি ব্যবহারকারীদের পাসওয়ার্ড পরিহার করে 'পাসকি' ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে আসছে। কারণ, এখনকার দিনে পাসওয়ার্ড চুরি করা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে সহজ হয়ে গেছে।
মাইক্রোসফট ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, তারা বিশ্বের এক বিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড মুছে ফেলতে চায়। গুগলও তাদের অধিকাংশ ব্যবহারকারীদের পাসকি চালু করতে বলছে।
পাসকি কী? পাসকি এমন এক প্রযুক্তি যা ব্যবহারকারীর ডিভাইসের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে অ্যাকাউন্টে সাইন-ইন নিশ্চিত করে। এতে আলাদা কোনো পাসওয়ার্ড লাগে না, এমনকি টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) কোডও দরকার হয় না। ফলে এটি “ফিশিং রেসিস্ট্যান্ট” বা ফিশিং প্রতিরোধে সক্ষম।
নতুন হুমকি: জেনারেটিভ এআই ব্যবহার করে ফিশিং ঠিক এমন এক সময়ে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান Okta সতর্ক করেছে যে, হ্যাকাররা এখন Vercel কোম্পানির তৈরি করা “v0” নামের এক জেনারেটিভ এআই টুল ব্যবহার করছে। এই টুলের মাধ্যমে সহজ টেক্সট কমান্ড থেকেই বাস্তবসম্মত, নকল লগইন পেজ তৈরি করা সম্ভব – যা দেখতে হুবহু আসল সাইটের মতো।
Okta জানিয়েছে, “এই প্রযুক্তি এখন ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লগইন পেজ নকল করতে, যার মধ্যে একটি ছিল Okta’র নিজস্ব গ্রাহক।” এমনকি একটি ভিডিও-ও প্রকাশিত হয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে কত সহজে একটি ফিশিং সাইট তৈরি করা যায়।
চেনা ছকের বাইরে, পুরনো কৌশল নয় আর আগের মত ভুল বানান, নিম্নমানের ছবি বা সন্দেহজনক URL দিয়ে তৈরি ফিশিং সাইটের যুগ শেষ। এখনকার হামলাগুলো অনেক নিখুঁত এবং প্রযুক্তিনির্ভর। ফলে এগুলো থেকে রক্ষা পেতে সাধারণ ব্যবহারকারীর পক্ষে শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
কি করণীয়? বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ হলো—
যত দ্রুত সম্ভব আপনার গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টে পাসকি যুক্ত করুন।
যেসব অ্যাকাউন্টে এখনও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করছেন, সেগুলোতে জটিল ও ইউনিক পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
2FA ব্যবহারের সময় SMS নয়, বরং অথেন্টিকেটর অ্যাপ (যেমন Google Authenticator, Authy ইত্যাদি) ব্যবহার করুন।
যদিও অথেন্টিকেটর অ্যাপ পাসকির মতো সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়, তবুও এটি এসএমএস-ভিত্তিক 2FA-এর তুলনায় অনেক বেশি সুরক্ষিত।
Okta বলছে, “জেনারেটিভ এআই যত সহজলভ্য ও শক্তিশালী হচ্ছে, ততই ফিশিং ও সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ঝুঁকি বাড়ছে।” তাই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান—উভয়েরই উচিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আপডেট করা এবং পাসওয়ার্ডের যুগ থেকে ধীরে ধীরে সরে আসা।
এফপি/ টিএ