বলিউডের ঠোঁটকাটা পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ আবারও প্রকাশ্যে বলে ফেললেন সেই কথাটাই, যা অনেকেই মনে মনে ভাবেন কিন্তু মুখে আনতে সাহস করেন না—“বলিউডে এখন আর কিছুই মৌলিক তৈরি হচ্ছে না, কেবল রিমেকের ওপর ভর করে চলছে ইন্ডাস্ট্রি।”
সম্প্রতি মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বিক্রমাদিত্য মোটওয়ানের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে অনুরাগ শোনালেন তার হতাশার সুর। দক্ষিণী ও বিদেশি হিট কনটেন্টের লাগাতার রিমেক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সৃজনশীল মৌলিকতা হারিয়ে যাচ্ছে। বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়েই হয়তো ভালো কপি বানানো সম্ভব!”
এই ব্যঙ্গের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল নির্মম বাস্তব। অনুরাগ স্পষ্ট করে জানান, আজকের বলিউড প্রি-প্রোডাকশন থেকে শুরু করে স্ক্রিপ্ট লেখা, এমনকি এডিটিং পর্যন্ত—প্রতিটি স্তরে এআই-এর ওপর নির্ভর করছে। তবে তার সবচেয়ে বড় আশঙ্কা, “আমরা হয়তো একসময় নিজেদের মতো করে কিছু ভাবতেই ভুলে যাবো।”
শুধু সৃজনশীলতা নয়, এআই-এর পরিবেশগত প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনুরাগ। তার কথায়, “প্রতিটি এআই প্রম্পটে গড়ে ১৬ আউন্স জল ব্যবহৃত হয়। অনুমান করা হচ্ছে, ২০২৭ সালের মধ্যে কেবলমাত্র এআই সার্ভার ঠান্ডা রাখতেই যে পরিমাণ জল খরচ হবে, তা ডেনমার্কের বার্ষিক ব্যবহারকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।”
তিনি উদাহরণ দেন স্লামডগ মিলিয়নেয়ার ছবির, যেখানে পরিচালক ড্যানি বয়েল একটি ল্যাপটপে সংযুক্ত ছোট ক্যামেরা ব্যবহার করে শুটিং করেছিলেন—ছোট অথচ অত্যন্ত কার্যকরী সেই প্রক্রিয়াকেই তিনি বলেন “টেকসই নির্মাণশৈলী”।
এই একই মঞ্চে ছিলেন পরিচালক বিক্রমাদিত্য মোটওয়ানেও। যদিও অনুরাগের মতো তীব্র সমালোচনা করেননি, তবে তার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অনেক বেশি আশাবাদী। তিনি মনে করেন, “ভিএইচএস থেকে স্যাটেলাইট, স্যাটেলাইট থেকে ওটিটি—প্রতিটি পর্যায়েই বলা হয়েছে সিনেমা শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে সিনেমা শুধু রূপ বদলেছে, কখনও মরেনি।”
তার মতে, এআই নির্মাণ পদ্ধতিকে নয়, বরং দর্শকের অভিজ্ঞতাকে বদলাবে। অর্থাৎ, টেকনোলজির ব্যবহার হবে উপকরণ হিসেবে, উদ্দেশ্য হিসেবে নয়।
এসএম/টিএ