তুরস্কে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানবিরোধী বিক্ষোভের পর রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন আরও তীব্র হয়েছে। ১৯ মার্চ ইস্তাম্বুলের মেয়র ও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী একরেম ইমামোলুর গ্রেপ্তারের পর থেকে পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে উঠেছে—এবার এর প্রভাব এসে পড়েছে সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও।
বিরোধীদের পক্ষ নেওয়া শিল্পী ও অভিনেতাদের ওপর শুরু হয়েছে চাপ ও হয়রানি। সরকারঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠান ও মিডিয়া বয়কটের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে জনপ্রিয় অভিনেতা আইবুকে পুসাত, ফুরকান আন্দিচ এবং বোরান কুজুমকে বরখাস্ত করেছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম TRT। সমর্থন জানিয়ে নিজের কাজ হারিয়েছেন অভিনেত্রী বাসাক গুমুলচিনেলিওলুও।
একইসঙ্গে এক্স অ্যাকাউন্ট ব্লকড হয়ে গেছে অভিনেতা রোজদা ডেমিরার ও আলিকান ইউচেসয়ের। বয়কটের পক্ষে প্রকাশ্য বক্তব্য দেওয়ায় অভিনেতা চেম ইগিত উজুমোলুকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল, যদিও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অভিনেতাদের সংগঠন এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। সংগঠনের ভাষ্য, শুধু তুরস্ক নয়, সারা বিশ্বেই শিল্পীদের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বার্ক এসেন বলেন, “২৩ বছরের একেপি শাসনের পরও তরুণ শিল্পীরা সরকারবিরোধী অবস্থান নিতে সাহস দেখাচ্ছেন, এটা আশার আলো।” তার মতে, এই শিল্পীরা রাজনীতিতে সরব না হলেও সময়ের প্রেক্ষিতে তাদের অবস্থান নেওয়া স্বাভাবিক।
অন্যদিকে সমাজবিজ্ঞানী আসলি দালগাল এভরেন বলছেন, “তুরস্কের টিভি ও অভিনয় শিল্পে এমনিতেই অমানবিক পরিশ্রম, বেতন বৈষম্য ও রাজনৈতিক পক্ষপাত চলছে। এখন রাজনৈতিক চাপে যোগ হয়েছে হয়রানি।”
সরকারপক্ষ বলছে, শিল্পীদের রাজনীতি থেকে দূরে থাকা উচিত। তবে শিল্পী ইউনিয়নের জবাব, নাগরিক হিসেবে শিল্পীদেরও মতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে। রাজনীতির বাইরে থাকতে পারে শুধু পুলিশ, বিচার বিভাগ ও সেনাবাহিনী—শিল্প নয়।