ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন “যে পশ্চিমা বিশ্বকে আমরা চিনতাম, তা আর নেই”। বুধবার (১৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিগুলো “ঐতিহাসিক” পরিবর্তন আনছে, যা ইইউকে এই নতুন বিশ্বব্যবস্থা গঠনে “খুব সক্রিয় ভূমিকা পালন” করতে বাধ্য করছে।
এমনকি মার্কিন প্রশাসন এবং ইউরোপের মধ্যে বর্তমান সংকট ইইউকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
উরসুলা ভন ডার লিয়েন মঙ্গলবার জার্মান সংবাদপত্র দেই জেইট-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি বিশ্ব রাজনীতিতে “ঐতিহাসিক পরিবর্তন” আনছে, আর এই প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উচিত নতুন বিশ্বব্যবস্থায় আরও সক্রিয় ও প্রভাবশালী ভূমিকা নেওয়া।
তিনি বলেন, “যে পশ্চিমা বিশ্বকে আমরা চিনতাম, তা আর নেই।”
ভন ডার লিয়েন নিজেকে “একজন নিবেদিত আটলান্টিকপন্থি” এবং “যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধু” হিসেবে পরিচয় দিলেও স্বীকার করেন যে— যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে ইউরোপের টানাপোড়েন এবং বিশ্বজুড়ে ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন ইউরোপকে নতুন করে অবস্থান নিতে বাধ্য করছে।
তিনি আরও বলেন, “যে বিশ্বব্যবস্থাকে আমরা স্থির ও সুশৃঙ্খল ভেবেছিলাম, তা এখন বিশৃঙ্খলায় রূপ নিচ্ছে। এর পেছনে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাশা—এই দুটো বড় কারণ রয়েছে।”
এই বাস্তবতায় ইউরোপকে একটি নতুন রূপে, আরও আত্মবিশ্বাসী ও বৈশ্বিক অংশীদার হিসেবে গড়ে তুলতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভন ডার লিয়েন জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের আগ্রাসী বাণিজ্যনীতি সত্ত্বেও ইউরোপ স্থির থেকেছে। এছাড়া নির্ভরযোগ্যতার জন্য বিশ্বের বহু দেশ এখন ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও কৌশলগত অংশীদারত্ব চায়।
তিনি বলেন, “আমি এখন কানাডা, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো এবং দক্ষিণ আমেরিকার অনেক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে নিয়মিত কথা বলছি, যারা নতুন এই বিশ্বব্যবস্থায় আমাদের সঙ্গে কাজ করতে চায়।”
ভন ডার লিয়েন আরও বলেন, যদিও যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ বাণিজ্য সম্পর্ক বৈশ্বিক বাণিজ্যের ১৩ শতাংশ জুড়ে রয়েছে, বাকি ৮৭ শতাংশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে—যা ইউরোপের সামনে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্টের মতে, “এখন সবাই ইউরোপের সঙ্গে আরও বেশি বাণিজ্য চায়। এটা শুধু অর্থনৈতিক নয়, এটা নিয়মনীতি গঠনের এবং পূর্বাভাসযোগ্যতার ব্যাপারেও। ইউরোপের যে নির্ভরযোগ্য ভাবমূর্তি, তা আবারও মূল্যবান হয়ে উঠছে।”
এসএম/টিএ