শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার আগ থেকেই ওয়ানডে অধিনায়কত্ব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। কেননা নাজমুল হোসেন শান্তকে না জানিয়ে নাকি মেহেদী হাসান মিরাজকে অধিনায়ক করা হয়েছে। তাই গুঞ্জন ছিল টেস্টের অধিনায়কত্বও ছেড়ে দিতে পারেন শান্ত। কলম্বোয় দ্বিতীয় শেষে সেই গুঞ্জনই সত্যি হয়েছে।
টেস্টের নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছেন শান্ত। তাতে অনেকে জানান, হয়তো প্রতিবাদ স্বরূপ এমনটা করেছেন বাঁহাতি ব্যাটার। কেননা তার নেতৃত্ব ছাড়ার বিষয়টা নাকি জানত না বিসিবি। তাই দুজনের ওপর এর প্রভাব পড়ছে কিনা তা জানতে চাওয়া হয়েছিল মিরাজের কাছে।
বাংলাদেশি অলরাউন্ডার জানান, তাদের ভেতরে এমন কিছুই নেই।
দলের ভেতরেও এসব আলোচনা হয় না জানিয়ে মিরাজ বলেছেন, ‘ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আমরা জানি এটা অনেক আলোচনা হচ্ছে। আমাদের ভেতর এত আলোচনা হচ্ছে না। একজন প্লেয়ার হিসেবে আমরা যখন খেলি, আমাদের কাজ হলো দলকে সাপোর্ট করা, দল পারফরম্যান্স করা। শান্ত যখন ক্যাপ্টেন ছিল, আমি অনেক সাহায্য করেছি, পারফর্ম করেছি। আপনার এর আগে যারা ক্যাপ্টেন ছিল, তাদের ব্যাপারেও পারফর্ম করা গুরুত্বপূর্ণ। দলের ভেতর একজন ক্যাপ্টেন থাকে, পারফর্ম সবাইকেই করতে হয়। সবাই পারফর্ম করলেই দেশ ভালো করে; দলের রেজাল্ট হয়। দলের সবাই পারফর্ম করাটা সাপোর্ট করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শান্ত বা আমার ভেতরে এমন কিছু নেই। সবার আগে টিম, বাংলাদেশ। এই জিনিসটা গুরুত্বপূর্ণ।’
দীর্ঘ ১৮ বছর পর এবারই প্রথম ‘পঞ্চ পাণ্ডবদের’ কাউকে ছাড়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। তারা না থাকলেও শান্ত, লিটন দাসরা অনেকদিন ধরে খেলছেন তাই খুব একটা সমস্যা হবে না জানিয়ে মিরাজ বলেছেন, ‘আমরা যারা আছি, আমরা অনেক দিন একসাথে খেলেছি আমি, শান্ত, লিটন দাস আছে, মুস্তাফিজ, তাসকিন আহমেদ, তাওহিদ হৃদয় অনেকের কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক দিন খেলেছে। ফলে তারা জানে কীভাবে আন্তর্জাতিকে খেলতে হয়। সেসব জায়গায় তারা চিন্তা করে উন্নতি করতে পারবে।’
নিজের অধিনায়কত্বের বিষয়ে মিরাজ বলেছেন, ‘আপনি যেটা বললেন কঠিন সময়ে আমি যে পজিশনে ব্যাট করি সবসময় চাপের মধ্যে করতে হয় (হাসি)। বোলিংটাও চাপের মধ্যে করতে হয়। আমি অনেক ম্যাচে চাপের মধ্যে খেলেছি। চাপ কীভাবে সামলাতে হয় মাঠ থেকে আমি অনেক শিক্ষা নিয়েছি। আমার যে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাটা আছে সেটা কাজে লাগাতে চেষ্টা করব।’
পূর্বের বেশ কজন অধিনায়কের অধীনে খেলতে পারার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান মিরাজ। ২৭ বছর বয়সী অলরাউন্ড বলেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ দলের প্রতিটা ক্যাপ্টেনের আন্ডারে খেলেছি। আমার জন্য এটা একটা ব্লেসিং। মাশরাফি ভাই, তামিম ভাই, লিটন দাস বলেন, শান্তর আন্ডারে খেলেছি। তাদের অভিজ্ঞতা দেখেছি কাছ থেকে। আমি যেহেতু ৮ বছর আন্তর্জাতিক খেলেছি। চাপ নেওয়ার যে সামর্থ্য আমার আছে আমি মনে করি এটা আমার এখন হয়েছে। আগে হলে হয়ত পারতাম না, তবে এখন আশা করি এটা এপ্লাই করতে পারব।’
অধিনায়কের প্রথম লক্ষ্যেই যে জয় সেটাও জানিয়েছেন মিরাজ। তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই ক্যাপ্টেন হিসেবে প্রথম লক্ষ্য দলকে রেজাল্ট করানো। সবাই দলের জন্য খেলবে। ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দল হিসেবে ভালো করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই মেসেজ সবার কাছে থাকবে এবং অনুপ্রেরণা এটাই থাকবে আমার কাছে মনে হয়।’
আরআর/এসএন