গাজা সফরকারীদের ভিসা তদন্তে সোশ্যাল মিডিয়া খতিয়ে দেখবে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে ভিসার জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে যারা ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা এর পর গাজা উপত্যকা সফর করেছেন, তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এ সংক্রান্ত বার্তা সব কূটনৈতিক ও কনস্যুলার মিশনে পাঠানো হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর নির্দেশে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই নজরদারির সিদ্ধান্ত নেয়।

অভিবাসী কিংবা অভিবাসী নয় এমন সকল ভিসাধারীরাই এ সোশ্যাল মিডিয়া যাচাই-বাছাইয়ে পড়বেন।

বেসরকারি সংস্থার কর্মী থেকে শুরু করে যারা সরকারি বা কূটনীতিক কাজে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটিতে গিয়েছিলেন তাদের জন্যও এটা প্রযোজ্য। যত অল্প সময় বা ক্ষণই সেখানে থাকেন না কেন তাদের এই যাচাই বাছাইয়ের মধ্যে পড়েতে হবে।

রয়টার্স জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাইয়ের ফলে নিরাপত্তা-সম্পর্কিত কোনো অবাঞ্ছিত তথ্য পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ভিসা আবেদনটি জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য তদন্তে পাঠানো হবে।

১৭ এপ্রিলের পাঠানো এই তারবার্তায়ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর স্বাক্ষর আছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তার মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র তারবার্তাটি সম্পর্কে কিছু বলতে রাজি হননি। শুধু জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য প্রত্যেক আবেদনকারীকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কঠোর যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

এর আগে রুবিও সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ২০২৫ সালের শুরু থেকে তার দপ্তর ইতোমধ্যে ৩০০টির বেশি ভিসা বাতিল করেছে। এর মধ্যে এমন ভিসাধারী ছাত্রও রয়েছেন, যারা ইসরায়েলের গাজা আগ্রাসনের সমালোচনা করেছেন—যদিও মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির অভ্যন্তরে অবস্থানকারী যে কোনো ব্যক্তির মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত।

ট্রাম্প প্রশাসন এর আগে বলেছিল, এসব ছাত্রদের কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছেন। বিশেষ করে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ তীব্রতর হওয়ার পর।

গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলার কারণে যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে শিক্ষার্থী ভিসায় দেশটিতে থাকা অনেককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে, কাউকে কাউকে আটকও করেছে। ,যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তগুলো দেশজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা নিয়ে।

বিশ্লেষকদের মতে, গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দেশটির ভিসা ও শিক্ষানীতিতে বড় ধরনের রাজনৈতিক প্রভাব পড়ছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থের জন্য হুমকি’ হিসেবে দেখছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

আরএ/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন Apr 20, 2025
img
শুনানির জন্য প্রস্তুত এ টি এম আজহারের আপিল, সোমবার উপস্থাপন Apr 20, 2025
img
পিতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা রেখে আইন প্রণয়নের সুপারিশ Apr 20, 2025
img
আইএমএফ’র টাকা নিয়ে যা বললেন গভর্নর Apr 20, 2025
img
বিজয়ের স্বপ্ন পূরণ: ৫০ সেঞ্চুরির মাইলফলকে গড়লেন ইতিহাস Apr 20, 2025
img
নিজের রেকর্ড এবার নিজেই ভাঙতে চলেছেন শাকিব? Apr 20, 2025
img
ফিক্সিং তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই টেকনিক্যাল কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন মনি Apr 20, 2025
img
মাতৃত্ব ও পিতৃত্বকালীন ছুটিতে বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব Apr 20, 2025
img
‘আপা,চলেন প্রেম করি’এইভাবেই মুনমুনকে প্রস্তাব দেন জামিল Apr 20, 2025
img
দেশে ‘কেমন একটা অস্থিরতা চলছে’ : মির্জা ফখরুল Apr 20, 2025