চট্টগ্রামে খালে তলিয়ে যাওয়া সেই শিশুর মরদেহ উদ্ধার

চট্টগ্রাম নগরের কাপাসগোলা এলাকায় হিজড়া খালে তলিয়ে যাওয়া সেই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে হয়েছে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে নগরের আসাদগঞ্জের চামড়া গুদাম মোড়ের পার্শ্ববর্তী চাক্তাই খালে থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিখোঁজ হওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়েছেন তল্লাশির দায়িত্বে থাকা নৌবাহিনীর ডুবুরি টিমের প্রধান লেফটেন্যান্ট বেলাল হোছাইন। তিনি বলেন, নিখোঁজ শিশুটিকে তার পরিবারের লোকজন শনাক্ত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, শিশুর নাম চেহরিস। তার বাবার মো. শহীদ এবং মায়ের নাম সালমা বেগম।

এর আগে গতকাল (শুক্রবার) দিবাগত রাত ৮টার দিকে ব্যাটারিচালিত একটি রিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হিজড়া খালে তলিয়ে যায়। ওই রিকশায় ভুক্তভোগী শিশুর মা ও নানি ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন। দুর্ঘটনার পর মা ও নানি উঠতে সক্ষম হলেও তলিয়ে যায় ৬ মাস বয়সী ওই শিশুটি। ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে থাকে। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরাও। রাতভর অভিযানে শিশুটির হদিস মেলেনি।

স্থানীয় বাসিন্দা আল আমিন জানান, হিজড়া খালটি মিশেছে নগরের চাক্তাই খালে। শিশুটি যেখান থেকে নিখোঁজ হয়েছে সেখান থেকে উদ্ধারের স্থানটি অন্তত দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূরে হবে।

চট্টগ্রামে খাল ও নালায় তলিয়ে প্রাণহানির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট মুরাদপুর মোড়ে সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ বৃষ্টির মধ্যে নালায় পড়ে নিখোঁজ হন এবং দীর্ঘ উদ্ধার অভিযানেও তার মরদেহ পাওয়া যায়নি। একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর আগ্রাবাদ এলাকায় হাঁটার সময় নালায় পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া মারা যান।

২০২২ সালে ষোলশহর এলাকায় শিশু কামাল নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় এবং তিন দিন পর মুরাদপুরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট আগ্রাবাদ রঙ্গীপাড়া এলাকায় ১৮ মাসের শিশু ইয়াছিন আরাফাত নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় এবং প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার হয়। ২০২৪ সালের জুনে গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় ৭ বছরের শিশু সাইদুল ইসলাম নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় এবং পরদিন নাসির খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

চট্টগ্রাম শহরে খোলা নালা ও ড্রেনের কারণে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। দুর্ঘটনায় কখনও শিশু, কখনও বৃদ্ধ কিংবা শিক্ষার্থী নালায় পড়ে প্রাণ হারালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে উদাসীন। প্রতিটি ঘটনার পরই কিছুদিন বিভিন্ন মহলে আলোচনা হয় এবং কিছুদিন পর থেমে যায়। নালাগুলোর মুখ খোলা পড়ে থাকে। বৃষ্টি হলেই নালা ও ড্রেনগুলো পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় এবং পথচারীদের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়। সিটি কর্পোরেশনের বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভারতের সহায়তা ছাড়া তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন সহজ নয়: পরিকল্পনা উপদেষ্টা Apr 20, 2025
img
নির্বাচনকালীন তিন মাসের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমেদ Apr 20, 2025
img
যাদের নির্বাচন থেকে বাদ দেবেন তারা ঘরে বসে আঙুল চুষবে? : জি এম কাদের Apr 20, 2025
img
স্বস্তির বাতাস বইছে রিজার্ভে Apr 20, 2025
img
'জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার যুবক Apr 20, 2025
img
গাজায় আরও ৩০ হাজার তরুণকে যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ Apr 20, 2025
img
ছোট ছেলে আব্রামের পেছনে মাসে কত খরচ শাহরুখের Apr 20, 2025
img
যারা দেশে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, তারা কখনোই জনগণের বন্ধু হতে পারে না : মির্জা ফখরুল Apr 20, 2025
img
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ২ জন Apr 20, 2025
img
সংস্কার কাজে দেরি না করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Apr 20, 2025