গাজীপুরের কোনাবাড়ী শিল্পাঞ্চলে তুসুকা গ্রুপের ছয়টিসহ ৯ কারখানায় বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) আন্দোলনের মুখে তুসুকা গ্রুপের ছয় প্রতিষ্ঠানে তিন দিনের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। লাইফ টেক্সটাইল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে তারা।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী গ্রেডিং, চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদ, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ নানা দাবিতে এই বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) কাঠামো অনুযায়ী শতভাগ গ্রেডিং বাস্তবায়ন, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, বাৎসরিক বনভোজন আয়োজন, স্বজনপ্রীতি বন্ধ, ঈদের ছুটিকে জেনারেল ছুটি হিসেবে না খাটানো, চাকরির মেয়াদ অনুযায়ী ছুটির অর্থ পরিশোধসহ কয়েক দফা দাবিতে তারা শনিবার থেকে কারখানার অভ্যন্তরে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে।
তারা আরো জানায়, সোমবার সকালে শ্রমিকরা প্রবেশ করতে এসে কারখানার গেট বন্ধ এবং তিন দিনের সাধারণ ছুটির নোটিশ দেখতে পায়। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিতে চাইলে পুলিশ সরিয়ে দেয়।
তুসুকা গ্রুপের পরিচালক মো. তারেক হাসান বলেন, শনিবার বিকেলেই শ্রমিকদের সম্পূর্ণ দাবি-দাওয়া মেনে নিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তা না মেনে শ্রমিকরা রবিবারও কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে তারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর চড়াও হন এবং মারধর শুরু করে। এতে পাঁচজন আহত হন।
তাদের মধ্যে সেম্পলম্যান জাবেদ আলীকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় রাতেই সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত তিন দিনের জন্য তুসুকা জিন্স, তুসুকা ট্রাউজার্স, তুসুকা ডেনিম, তুসুকা প্রসেসিং, তুসুকা ওয়াশিং এবং তুসুকা প্যাকেজিংয়ে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী শ্রমিকদের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে কারখানাগুলো খোলা থাকবে।
এদিকে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ এবং পুনর্বহাল দাবিতে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করেন কোনাবাড়ির এমএম নিটওয়্যার এবং বাইমাইল এলাকার হর্নবিল নিটিংয়ের শ্রমিকরা।
এমএম নিটওয়্যারের শ্রমিকরা বলেন, কর্তৃপক্ষ ২৫০ জন শ্রমিককে চাকুরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ছাঁটাই বন্ধের দাবিতে তারা আন্দোলনে নেমেছেন। তা ছাড়া বিসিকের লাইফ টেক্সটাইলের শ্রমিকরা অতিরিক্ত সুবিধা দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।
কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহউদ্দিন জানান, এমএম নিটওয়্যার এবং হর্নবিল নিটিং কারখানার শ্রমিকরা ছাঁটাই বন্ধ, এবং চাকুরিচ্যুতদের পুনর্বহাল দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা দুপুরে বাসায় ফিরে যান।
তিনি আরো জানান, রবিবারের হামলা ও কর্মকর্তাদের আহত করার প্রেক্ষিতে সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় তুসুকা গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো তিন দিনের জন্য বন্ধের কথা পুলিশকে অবহিত করেছে। কোথাও কোনো ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। সব কারখানার সামনেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এসএম/টিএ