ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের সাবেক পুলিশপ্রধান ওম প্রকাশকে হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী পল্লবীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিজ বাড়ি থেকেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।
বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার দয়ানন্দ জানিয়েছেন, এই খুনের মামলার তদন্তভার কেন্দ্রীয় অপরাধ দমন শাখাকে দেওয়া হয়েছে।মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) থেকে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের দায়িত্ব নেবে।
রবিবার বেঙ্গালুরুর নিজ বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় ৬৮ বছরের ওম প্রকাশের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পেটে, বুকে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল তার। এই খুনের মামলায় সন্দেহভাজনের তালিকায় ছিলেন ওমের স্ত্রী।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই রবিবার রাত থেকে টানা পল্লবী এবং ওমের কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। বাবার খুনের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওমের ছেলে কার্তিকেশ। তার দাবি, মা পল্লবী এবং বোন কৃতীই সাবেক পুলিশপ্রধানকে খুন করেছেন। তাকে আগেও খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
কার্তিকেশ পুলিশকে জানিয়েছেন, মা এবং বোনের থেকে খুনের হুমকি পাওয়ার পরই বাড়ি ছেড়ে নিজের বোনের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন ওম। মৃত্যুর দু’দিন আগে তাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছিলেন কৃতী। নিজের বাড়িতে ফিরতে রাজি ছিলেন না ওম। মেয়ের জোরাজুরিতেই ফিরে এসেছিলেন। কার্তিকেশের কথায়, ‘আমার মা এবং বোন মানসিক বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন।প্রায়ই বাবার সঙ্গে ঝগড়া করতেন তারা। আমার দৃঢ় সন্দেহ, ওরাই আমার বাবার খুনের সঙ্গে জড়িত।’
তদন্তে জানা গেছে পল্লবীর বিভিন্ন মানসিক সমস্যা ছিল। বাড়িতে প্রায়ই অশান্তি করতেন তিনি। এমনকি তাকে গালিগালাজ করতেও শুনেছেন প্রতিবেশীরা। অনেক সময় তারা এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। কার্তিকেশ জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যায় তিনি কর্ণাটক গল্ফ অ্যাসোসিয়েশনে ছিলেন। তখন এক প্রতিবেশী তাকে ফোন করে জানান, ওমকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তার শরীরে একাধিক ছুরির আঘাত রয়েছে। সোমবার সকালে একটি ভাঙা বোতল এবং একটি ছুরি পাওয়া গেছে। কার্তিকেশের অভিযোগ, মাস কয়েক আগে পল্লবী তার বাবাকে পাথর ছুড়ে আঘাত করেন। তাতে তিনি আহত হয়েছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর দিকে প্রথমে মরিচের গুঁড় ছুড়েছিলেন পল্লবী। তারপর তাকে বেঁধে ভাঙা কাচের বোতল দিয়ে কুপিয়েছিলেন। স্বামীকে খুনের কথা অন্য এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীকে ফোন করে জানিয়েছিলেন পল্লবী। ওই নারী তার স্বামীকে বিষয়টি জানান। তারপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। ওম প্রকাশ বিহারের বাসিন্দা। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে কর্ণাটকের ডিজিপি হয়েছিলেন।
এমআর/টিএ