বাংলাদেশ দলে এখন আর নিয়মিত দেখা যায় না সাকিব আল হাসানকে। দীর্ঘ দিন অলরাউন্ডার হিসেবে দলের আস্থা হয়ে ছিলেন সাকিব। বর্তমানে তিন ফরম্যাটে সাকিবকে ছাড়াই খেলছে বাংলাদেশ।
সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান মিরাজ।সাকিবের জায়গা পূরণ করতে তো আরেকজন সাকিবকে লাগবে। সেই আরেকজন সাকিব যদিও নেই বাংলাদেশের কাছে। তবে অলরাউন্ডার হিসেবে মিরাজও কম যান না। ব্যাটিংয়ে গত কয়েক বছরে বেশ উন্নতি করেছেন মিরাজ। বোলিংটা ভালো আগে থেকেই। আপাতত তাই অলরাউন্ডার হিসেবে টাইগারদের ভরসা মিরাজেই।
মিরাজ নিজেও আস্থার প্রতিদান দিতে প্রস্তুত। সিলেট টেস্টে জিম্বাবুয়েকে প্রথম ইনিংসে ২৭৩ রানে থামানোর পেছনে বড় ভূমিকা আছে মিরাজের। ৫২ রান খরচায় ৫ উইকেট তুলেছেন তিনি। দিন শেষে ব্যাটিং-বোলিং দুই জায়গাতেই উন্নতির চেষ্টার কথা জানিয়েছেন মিরাজ।
সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ বলেন, 'যেহেতু আমার কাছে দুইটাই অপশন আছে, দুই জায়গাতেই (ব্যাটিং এবং বোলিং) কাজ করা জরুরি। ২-৩ বছর ধরে ব্যাটিংটা একটু ভালো ফোকাস দিয়েছি। কিছু জায়গায় উন্নতি করেছি, কিছু জায়গায় লাগবে। হয়ত ১০০% হবে না, তবে এভাবে আগাতে পারলে দলের জন্য ভালো হবে, আমার জন্যও ভালো হবে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাস্তবতা প্রসঙ্গে মিরাজ জানান, ‘দেখেন শুরুতে যাদের অভিষেক হয় তাদের নিয়ে অত আইডিয়া থাকে না। ১-২ বছর খেললে তার সম্পর্কে জানা হয়, পরে আরও বেশি জানা যায়। যেহেতু খেলা দেখে সবাই, ফুটেজ আছে। কার কোথায় উন্নতি করতে হবে আমরা সবাই জানি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উন্নতি করতেই হবে নাইলে আপনি টিকতে পারবেন না। কারণ এখানে সব বিশ্বমানের প্লেয়ার। জিম্বাবুয়ে কিন্তু ভালো জায়গায় বল করছে। এত সহজে আমাদের রান করতে দিচ্ছে না। আমরা উইকেটও অত সহজে নিচ্ছি না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক কঠিন। লং টাইম খেলতে গেলে উন্নতি করেই যেতে হবে।’
মিরাজ আরও বলেছেন, ‘দেখেন যে বোলিং আমার যখন ক্যারিয়ার শুরু আমি বোলার হিসেবেই খেলেছিলাম। ব্যাটিং সেভাবে পারিনি, মাঝেমধ্যে করেছি। সুযোগও কম থাকে ভালো খেলার। যখন নিজে রান করা শুরু করেছি সবাই আআমার উপর আত্মবিশ্বাস পেয়েছে, আমি নিজেও পেয়েছি। এই আত্মবিশ্বাসটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই আরও ভালো করা উচিত, কাজ করা উচিত।’
ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে মিরাজ জানান, ‘বোলাররা ভালো করেছি। আগের দিন সেভাবে ভালো পারিনি। পেসাররা খুব ভালো করেছে। নাহিদ (রানা), হাসান (মাহমুদ) এবং খালেদ (আহমেদ)। স্পিনারদের রোল ছিল আমরা যেন সাপোর্ট করতে পারি। টেস্টে পেসারদের ভালো রোল থাকে। তারা যেভাবে বল করেছে সেটা আমাদের অনেক সাহায্য করেছে জিম্বাবুয়েকে অলআউট করতে।’
এছাড়া নিজের বোলিং নিয়ে মিরাজ জানান, ‘খেলার ভিতরে থাকলে আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি কীভাবে বল করতে হবে। কোচের মেসেজ ছিল পেসটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভিডিও ফুটেজ আছে। আমি শুরুর দিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম স্পিড কেমন। উইকেট আসলে সবসময় হয়ত পাবেন না। তবে ব্যাটারকে যেন অনেক কষ্ট করতে রান করতে হয়। তখন সেরকম পরিস্থিতি হলে আউট হবে। তো সেই ভুলটা যেন করাতে পারি, সেই মানসিকতা ছিল সে কারণেই হয়ত উইকেটটা পেয়েছি।’
এছাড়া ব্যাটিংয়ে শর্ট বল খেলার দুর্বলতার ব্যাপারে মিরাজ জানান, ‘আমি কিন্তু রানও করেছি শর্ট বলে হ্যাঁ (হাসি)। দেখেন আপনাকে আমি একটা কথা বলি। আপনি যদি বলেন শর্ট বলে পৃথিবীর এমন কোনো ব্যাটার নাই যে দুর্বল না যদি প্রপার শর্ট বল করে। শর্ট বলে রানের অপশনও থাকে আবার আউট হওয়ার অপশনও থাকে। যেহেতু প্রথম বলে গিয়েছি অইরকম তো প্রত্যাশা থাকে না বাউন্সার নিয়ে। হয়ত আমি ইজিলি ছাড়তে পারতাম। আমার জন্য একটু চ্যালেঞ্জ ছিল। উন্নতি করার একটা জায়গা আছে। এটা নিয়ে কাজ করছি এবং ইনশাল্লাহ উন্নতি করব।’
এমআর/টিএ