শেখ হাসিনার আগে জামায়াত, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বিচারের দাবি শাজাহান খানের

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলায় সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে শাজাহান খানসহ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের ৭ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন।

এসময় তিনি বলেন, আসামিরা হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ও অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার করার জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এসময় শাজাহান খান হাত তুলে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এরপর তিনি বলেন, আমার হার্টে পাঁচটা ব্লক। আমি আন্দোলনের সময় চিকিৎসাধীন ছিলাম। আমাকে গ্রেফতার করে প্রথম যখন চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন তার দুই দিনের মাথায় আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমি পিপি সাহেবের কথার উত্তরে কিছু বলবো না। আমার অনুরোধ শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় যদি জিজ্ঞাসাবাদ করতেই হয় তাহলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ দেওয়া যেতে পারে। 

এরপর তিনি বলেন, মামলা যদি দিতেই হয় তাহলে এসব গায়েবি মামলা না দিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এসময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা তাকে কটাক্ষ করে কথা বলা শুরু করেন। এক পর্যায়ে সৈকত কথা বলতে চাইলে আদালতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। সৈকত বলেন, আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো হত্যাকাণ্ড হয়নি। এসময় এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীরা আবার হৈ হুল্লোড় শুরু করেন।

এসময় শাজাহান খান বিচারকের উদ্দেশে বলেন, আপনার সামনেই আমাদেরকে যেভাবে থ্রেট দেওয়া হচ্ছে। আপনি এর বিচার করবেন। এসময় আবারও উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে মহানগর পিপি দাঁড়িয়ে বলেন, আসামিদের উস্কানিমূলক কথাতে আদালতের পরিস্থিতি খারাপ হয়। আমি আদালতকে অনুরোধ করবো আসামিদের কথা বলার অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে। এসময় আবারও শাজাহান খান বলেন, আমাদের কথা বলাও যাবে না।

এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমানের আদালত শাজাহান খানের একদিন, আতিকুল ও সৈকতের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

এজলাস থেকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার পথে শাজাহান খান আবারও বলেন, শেখ হাসিনার যে অভিযোগের বিচার হচ্ছে, সেই অভিযোগের চেয়ে একাত্তরের অভিযোগ গুরুতর। লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যায় জামায়াত জড়িত।

জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ তিন হাজার সেনা কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। এরশাদ সাহেবও হত্যা চালিয়েছে। তারাও গিলটি। তাদের বিচার আগে করে তারপর শেখ হাসিনার বিচার। এসময় তাকে প্রশ্ন করা হয় জুলাই হত্যাকাণ্ডে অনুতপ্ত কিনা? জবাবে শাজাহান খান বলেন, অবশ্যই অনুতপ্ত।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন গত ১৯ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত হন মো. আরিফ। এরপর তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মারা যান। এ ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় ২৩৩ জনকে এজাহার নামীয় আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। 

এসএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
৩ দাবিতে আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা ডাকসুর Dec 15, 2025
img
রাজধানী ঢাকায় কমবে দিনের তাপমাত্রা Dec 15, 2025
img
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি, কমেছে দাম Dec 15, 2025
img
অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুক হামলার ঘটনায় প্রাণহানি বেড়ে ১৬ Dec 15, 2025
img

চানখারপুলে ছয় হত্যা

হাবিবুর রহমানসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু আজ Dec 15, 2025
img
ওসমান হাদির ঘটনায় মেহেরপুর সীমান্তে বিজিবির নিরাপত্তা জোরদার Dec 15, 2025
img
এমবাপে ও রদ্রিগোর গোলে আলাভেসের বিপক্ষে স্বস্তির জয় রিয়াল মাদ্রিদের Dec 15, 2025
img
এলাকার উন্নয়নে ঐক্যের আহ্বান হাবিবুর রশিদ হাবিবের Dec 15, 2025
img
শব্দদূষণকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে: রিজওয়ানা হাসান Dec 15, 2025
img

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

হলান্ডের জোড়া গোলে ক্রিস্টাল প্যালেসকে বড় ব্যবধানেই হারাল ম্যানচেস্টার সিটি Dec 15, 2025
img
আজ ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হবে সিঙ্গাপুর Dec 15, 2025
img
১৫ ডিসেম্বর: ইতিহাসের এই দিনে আলোচিত যত ঘটনা Dec 15, 2025
img

বুন্ডেসলিগা

টেবিলের তলানির দলের বিপক্ষে কোনোমতে হার এড়াল বায়ার্ন মিউনিখ Dec 15, 2025
img
ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রবাসীদের দেশ গড়ায় অবদান রাখার আহ্বান Dec 15, 2025
img
সিডনির ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন মুসলিম ফল ব্যবসায়ী Dec 15, 2025
img
বৃহস্পতিবারের মধ্যে চূড়ান্ত হচ্ছে বিএনপির শরিকদের আসন Dec 15, 2025
img
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় মামলা Dec 15, 2025
img
তুরস্কে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত Dec 15, 2025
img
অস্ত্রসহ সাবেক রেলমন্ত্রীর সহচর গ্রেপ্তার Dec 15, 2025
img
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হাঙ্গেরি Dec 15, 2025