বাবা বলেছিলেন, ‌আমায় ছাড়া কাশ্মীর দেখো না : শাহরুখ

শাহরুখ খানকে তাঁর বাবা তিনটি জায়গা ঘুরে দেখতে বলেছিলেন—ইস্তাম্বুল, প্যারিস আর কাশ্মীর। সেই সঙ্গে অনুরোধ, প্রথম দুটো জায়গা তাঁর ছেলে নিজের মতো করে ঘুরে দেখতেই পারে, কিন্তু কাশ্মীর নয়। “আমি তোমায় কাশ্মীর ঘুরে দেখাব। তুমি আমার সঙ্গে যেও”, আর্জি শাহরুখের বাবার। কারণ? অভিনেতার ঠাকুর্মা জন্মসূত্রে কাশ্মীরি। তাঁর বাবা তাই ভূস্বর্গকে হাতের তালুর মতো চিনতেন।

পুরনো কথা মনে পড়ে যাচ্ছে নায়কের, যখন মঙ্গলবার সেই কাশ্মীর রক্তাক্ত। পহেলগাওঁয়ে বেছে বেছে হিন্দুদের হত্যা করল সন্ত্রাসবাদীরা। বুধবার শোকবার্তায় তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করলেন শাহরুখ। মনে করলেন বাবাকে।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছেন শাহরুখ। বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে পারেননি তাই। আর তাই ২০১২ সাল পর্যন্ত কাশ্মীরে পা রাখেননি। তাঁর কথায়, “কত বার বন্ধুরা ডেকেছে। আমার পরিবার ছুটিতে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছে। অনেক সময় শুটিংয়ের সুযোগও এসেছে। আমি বাকি দুটো জায়গা ঘুরেছি। কেবল কাশ্মীর ছাড়া। বাবা নেই যে আর! কার সঙ্গে কাশ্মীর যাব? ওখানে গেলে বাবাকে মিস করব। বাবার জীবনের অনেকটা উপত্যকায় কেটেছে।”

২০১২-য় যশ চোপড়া বানান ‘যব তক হ্যায় জান’। প্রযোজককে তিনি বাবার মতোই সম্মান করতেন, ভালবাসতেন। তাই যশ যখন তাঁকে বলেছিলেন, “আমার সঙ্গে চল। আমি তোমায় কাশ্মীর দেখাব”, না করতে পারেননি তিনি। “সেই প্রথম আমার কাশ্মীর যাওয়া। সেই প্রথম ভূস্বর্গের সৌন্দর্যের সঙ্গে পরিচয়। ওখানে পা দিয়েই মনে হচ্ছিল, যেন বাবার কাছে এলাম! বাবাও তো ছেলে বেলায় এখানে ঘুরে বে়ড়াতেন।” পরে একাধিক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, যশ চোপড়ার সঙ্গে উপত্যকা ঘুরে দেখতে দেখতে তাঁর মনে হয়েছিল, বাবা প্রযোজকের রূপ ধরে তাঁকে কাশ্মীর চেনাচ্ছেন।

যে জায়গার সঙ্গে অভিনেতার পারিবারিক সম্পর্ক, আত্মিক টান সেই জায়গায় এত নৃশংসতা তাঁকে ক্ষুব্ধ করেছে। একই সঙ্গে যন্ত্রণাও পাচ্ছেন। সেই দুঃখ, সেই হতাশা প্রকাশ করার ভাষা নেই তাঁর। তিনি তাই ঈশ্বরের শরণ নিয়েছেন। আগামীতে যেন এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, প্রার্থনা তাঁর। যাঁরা অসময়ে চলে গেলেন, তাঁদের পরিবারকেও সান্ত্বনা জানিয়েছেন তিনি।

আরএম/টিএ 

Share this news on: