বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ-এর বসন্তকালীন বৈঠকের সাইডলাইনে যুক্তরাষ্ট্র ও আইএমএফ-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে সফররত বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। বৈঠকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক সমস্যা ও আইএমএফ-এর ঋণের কিস্তি ছাড় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বাড়িয়ে শুল্ক সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র জানতে চায়, এ বিষয়ে বাংলাদেশ কী কী সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে চায়। বাংলাদেশ জানায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়োজাহাজ, এলএনজি, কাপড় ও তুলা আমদানির পরিমাণ বাড়ানো হবে, পাশাপাশি দেশটিকে কিছু পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হবে। অশুল্ক বাধা দূর করা এবং বেসরকারি খাতকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিতে উৎসাহিত করার কথাও জানানো হয়।
বুধবার ওয়াশিংটনে ইউএসটিআর-এর সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।
আইএমএফ-এর সঙ্গে বৈঠকে সংস্থাটি জোর দিয়েছে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার আরও নমনীয় করা, রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং ব্যাংক খাত সংস্কারের ওপর। আইএমএফ-এর ডিএমডি নাইজেল ক্লার্কের সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, “আমরা আলোচনায় আছি এবং একটি ঐকমত্যের কাছাকাছি পৌঁছেছি।”
তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকার এখনই টাকার মান কমাতে বা ডলারের দাম বাড়াতে চায় না, কারণ এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে। আর রাজস্ব আয় হঠাৎ বাড়ানোও বাস্তবসম্মত নয়। এসব বিষয়ে আরও সময় চাওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শ্রমিক অধিকার, কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, শ্রম আইন ও মেধাস্বত্ব আইন সংস্কার নিয়েও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের ওপর ৩৭% বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়, যা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ৯ এপ্রিল থেকে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৭ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্টকে চিঠি দিলে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের রিজিওনাল ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে বলা হয়, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আর্থিক সংকটের কারণে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে ৩.৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হলে তা আগামী অর্থবছরে ৪.৯ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বসন্তকালীন বৈঠক ২১ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হচ্ছে আজ।
এসএস