মধ্যস্বত্বভোগীর কারণে অস্থির পেঁয়াজ ও তেলের বাজার, বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

দেশের অন্যতম বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে এক শ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগীর মজুতদারির কারণে অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। মৌসুমে দাম কমার বদলে উল্টো বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে ভালোমানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬৫ টাকার বেশি দামে।

পাইকারি বাজারে মেহেরপুরের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫–৫০ টাকায়, দেশীয় পেঁয়াজ ৫০–৫৪ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৫–৫৮ টাকায়। খুচরা বাজারে মানভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৮–৬৫ টাকায়। অথচ দেশে পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে এবং আমদানির অনুমতিপত্রও বন্ধ রয়েছে, ফলে দেশীয় পেঁয়াজই বাজারে প্রাধান্য পাচ্ছে। তারপরও সিন্ডিকেট গঠন করে কিছু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদেরই।

আড়তদারদের দাবি, মূল দাম নির্ধারণ করে দেন আমদানিকারকরা। আড়তদাররা শুধু কমিশনের ভিত্তিতে পণ্য বিক্রি করেন। ফলে দামের ওঠানামায় তাদের কোনো ভূমিকা নেই।

এদিকে ভোজ্যতেলের বাজারেও অস্থিরতা অব্যাহত রয়েছে। সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০–১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত ও খোলা তেল। ১ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০–১৯৫ টাকায়, ২ লিটার ৩৯০–৪০০ টাকা এবং ৫ লিটার বোতল ৯৫০–১ হাজার টাকায়। খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৮০ টাকার বেশি। অথচ নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৯ ও খোলা তেল ১৬৯ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা।

ভোজ্যতেলের সংকটের জন্য দায়ী করা হচ্ছে ডলার সংকট, আমদানিতে ধীরগতি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধিকে। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ায় উৎপাদন কমে যাওয়া ও বায়োডিজেলে ব্যবহারের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে পাম অয়েলের দাম।

এ ছাড়া, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে বেড়েছে ৫–১০ টাকা। বর্তমানে ডজনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১২৫–১৩০ টাকায়। চায়না রসুনের দাম কেজিতে বেড়ে হয়েছে ২২০ টাকা। তবে ভারতীয় আদা এখনও ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির বাজারেও আগুন:
টমেটো ছাড়া প্রায় সব সবজির দাম কেজিপ্রতি ৮০ টাকার ওপরে। কাঁকরোল, শজনে ও বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১০০–১৬০ টাকায়। কম দামের মধ্যে আছে আলু (২০–২৫ টাকা) ও টমেটো (৪০–৫০ টাকা)। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০–১০০ টাকায়।

মুরগি ও মাছের বাজারেও দামের ঊর্ধ্বগতি:
ব্রয়লার মুরগি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১৭০–১৯০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৫০–২৮০ টাকায়। রুই মাছ ৩৫০–৫০০, কাতল ৩০০–৪৫০, চিংড়ি ৮০০–১২০০ এবং পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৪০০–৫০০ টাকায়।


এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার ফল : আলী রীয়াজ Apr 26, 2025
img
অপূর্ণ এক স্বপ্ন আজও তাড়িয়ে বেড়ায় শাবানাকে Apr 26, 2025
img
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলী Apr 26, 2025
img
মাত্র চার মাসেই কোরআনের হাফেজ ১০ বছরের আহমাদ Apr 26, 2025
img
লাহোর বিমানবন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড Apr 26, 2025
img
পহেলগাম কাণ্ডে দেশজুড়ে শোকের আবহে কনসার্ট বাতিল শ্রেয়ার Apr 26, 2025
img
বিএনপি, এনসিপি কিংবা সরকার সবার সঙ্গেই সুসম্পর্ক চায় জামায়াত Apr 26, 2025
img
‘সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে আমাদের মাঝে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে’ Apr 26, 2025
img
রাবিতে গরমে হাতপাখা নিয়ে ভর্তিচ্ছুদের পাশে ছাত্রদল Apr 26, 2025
img
ডায়াবেটিস থাকলে হার্টের যত্ন নিতে যা জানা জরুরি Apr 26, 2025