রোনালদোর সঙ্গে দ্বৈরথকে ‘চমৎকার’ আখ্যা দিয়ে যা বললেন মেসি

তারা একসঙ্গে জিতেছেন ১৩টি ব্যালন ডি’অর, মাতিয়েছেন ইউরোপের ক্লাব ফুটবল, গড়েছেন রেকর্ডের পর রেকর্ড। পেশাদার ফুটবলে সম্ভবত সবচেয়ে দীর্ঘ এবং মর্যাদাপূর্ণ দ্বৈরথ—লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন ইতিহাসের পাতায় সোনালি অক্ষরে লেখা এক যুগ।

পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষপ্রান্তে এসেও এই দুই মহাতারকার প্রতি ভক্তদের আগ্রহে ভাটা পড়েনি এতটুকু। যদিও তারা এখন ইউরোপ ছেড়ে খেলছেন দুটি ভিন্ন মহাদেশে, তবুও ‘কে সেরা’—এই চিরচেনা বিতর্ক আজও সমান তীব্র।

দুই মহাতারকার দ্বৈরথ শুরু হয় ২০০৮ সালে। ওই বছর ব্যালন ডি’অর জিতে মেসিকে পেছনে ফেলেন রোনালদো। এরপর ২০০৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন পর্তুগিজ সুপারস্টার। শুরু হয় এল ক্লাসিকোর আলোড়ন তোলা যুগ।

২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বার্সেলোনার হয়ে মেসি আর রিয়ালের হয়ে রোনালদো একে অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দারুণ সব লড়াই উপহার দিয়েছেন। এই সময়ে ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে মেসি এগিয়ে থাকলেও রোনালদোও দিয়েছেন সমান চ্যালেঞ্জ।

সবমিলিয়ে মেসির ব্যালন ডি’অর সংখ্যা ৮, রোনালদোর ৫। মেসির গোলসংখ্যা, গোল্ডেন শ্যু ও ক্লাব-জাতীয় দলের সাফল্য তাকে কিছুটা এগিয়ে রাখলেও রোনালদোও পিছিয়ে নন—বিশেষ করে চ্যাম্পিয়নস লিগে তার রাজত্ব এখনো অক্ষুণ্ন।

সম্প্রতি ব্যালন ডি’অর আয়োজিত এক সাক্ষাৎকারে মেসি নিজেই স্বীকার করেছেন, রোনালদোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাকে আরও ভালো খেলোয়াড় হতে সাহায্য করেছে। তিনি বলেন,

“এই লড়াই সব সময়ই ছিল। এটা আমাদের জন্য যেমন ভালো ছিল, তেমনি ফুটবল সমর্থকদের জন্যও। আমরা একে অপরকে আরও ভালো খেলোয়াড় হতে বাধ্য করেছি। সে সবসময় জিততে চাইতো, আমিও তাই। সেই সময়টা ছিল দারুণ।”

এই দ্বৈরথ কেবল দুই তারকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, সেটি রূপ নিয়েছিল বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ, এমনকি ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের এক অনন্য প্রতিযোগিতায়।

আরও একবার মেসির কণ্ঠে শোনা গেল সেই সম্মান—

“শীর্ষে ওঠা সহজ, কিন্তু সেখানে টিকে থাকা অনেক কঠিন। আমরা দুজনেই দীর্ঘ সময় ধরে সেই অবস্থানে থেকেছি। এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।”

তাদের দ্বৈরথ হয়তো প্রায় শেষের পথে, কিন্তু ফুটবল ইতিহাসে এই অধ্যায় থাকবেই চিরঅম্লান—যেখানে প্রতিযোগিতা মানেই ছিল পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আর মাহাত্ম্য ছুঁয়ে যাওয়া এক যুগলবন্দি।


এসএস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
গোলাম আজমকে পরাজিত করেই বাংলাদেশের জন্ম: তাজনূভা জাবীন May 18, 2025
এবার গুলিস্তানে বের হলো আওয়ামী লীগ, ১১ জন পাকড়াও! May 18, 2025
img
নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ May 18, 2025
img
১৮ অঞ্চলে নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত May 18, 2025
img
‘নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না’ May 18, 2025
দেড়শ টাকার আম বিক্রি সাড়ে ৩ টাকায়! May 18, 2025
img
রাতের আঁধারে বিএসএফের পুশইন,সীমান্তে আতঙ্ক May 18, 2025
img
১০ বছর পর ইরান থেকে সৌদির হজ ফ্লাইট চালু May 18, 2025
কালো জাদু বিতর্কে বলিউডের যেসব নায়িকা May 18, 2025
img
রাওয়ালপিন্ডিতে সাকিবদের ম্যাচ অনিশ্চয়তায় May 18, 2025
img
টাইব্রেকারে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের May 18, 2025
img
মিরপুরের শ্যামল পল্লী বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে May 18, 2025
img
ভার্চুয়াল জগতে নাগরিকের নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব : সাইফুল হক May 18, 2025
img
মঞ্চ থেকে নামতেই তামান্নাকে ঘিরে ধরেন ভক্তরা May 18, 2025
img
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কর্নেল অলির সাক্ষাৎ May 18, 2025
‘বিদেশি নাগরিকত্বের’ অভিযোগে মুখ খুললেন খলিলুর রহমান May 18, 2025
img
নুসরাতের সাথে অন্যায় হচ্ছে, দাবি খায়রুল বাসারের May 18, 2025
img
নগদ ব্যবস্থাপনায় সরকার গঠন করবে সতন্ত্র বোর্ড May 18, 2025
img
বাংলাদেশের বিমান পরিবহন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী কানাডা May 18, 2025
img
পড়া বুঝিয়ে নিতে চেম্বারে আসেন সেই ছাত্রী, দাবি শিক্ষকের May 18, 2025