বন্ধু ইউনূসকে মাহাথির মোহাম্মদের পরামর্শ

আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার তুন ড. মাহাতীর মোহাম্মদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস—দুজনই নিজ নিজ ক্ষেত্রে কিংবদন্তি। তাদের বন্ধুত্ব বহু পুরোনো, দীর্ঘ পথচলার এক মেলবন্ধন। জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আবার দেখা হলো দুই বন্ধুর, বহু বছর পর, জাপানের রাজধানী টোকিওতে।
 
শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে দুই বন্ধু দীর্ঘ প্রায় ৪০ মিনিট একান্তে আড্ডায় মেতে ওঠেন। স্মৃতির পাতায় ফিরে যান। আলোচনা করেন ব্যক্তিগত সম্পর্ক, দুই দেশের সম্পর্ক, দক্ষিণ এশিয়ার সংকট, ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে।

শতবর্ষে মাহাতীর, অগ্রিম শুভেচ্ছা প্রধান উপদেষ্টার
ড. ইউনূস তাঁর প্রিয় বন্ধুকে অগ্রিম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। আগামী ১০ জুলাই মাহাতীর মোহাম্মদ তাঁর শততম জন্মবার্ষিকীতে পা রাখতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, "আমি আপনাকে শততম জন্মদিনের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।" মাহাতীর এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। দুই বন্ধু খুনসুটি, স্মৃতিচারণ আর হাস্যরসের মধ্য দিয়ে কাটান মূল্যবান মুহূর্তগুলো।

বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সম্পর্ক ও ভবিষ্যতের বার্তা
আলোচনায় উঠে আসে দুই দেশের সম্পর্ক। মাহাতীর বলেন, “অনেক বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন এবং উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হচ্ছেন।” তিনি উল্লেখ করেন, কীভাবে তার "Look East" (পূর্বমুখী দৃষ্টিভঙ্গি) নীতির মাধ্যমে মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটে। সেইসঙ্গে একই ধরনের কৌশল গ্রহণের পরামর্শ দেন ড. ইউনূসকে।

ড. ইউনূস এ সময় মাহাতীরকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। মাহাতীর জানান, যদি তার চিকিৎসকেরা অনুমতি দেন, তাহলে তিনি বাংলাদেশে আসতে আগ্রহী। তবে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁর ভ্রমণ অনেকটা সীমিত রাখা হয়েছে।
 
রোহিঙ্গা সংকট ও মানবিক দায়িত্ব
ড. ইউনূস মাহাতীর মোহাম্মদকে অনুরোধ করেন, তিনি যেন তাঁর আন্তর্জাতিক প্রভাব ও মর্যাদা কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তা করেন। এই বিষয়ে মাহাতীর আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার আশ্বাস দেন।

বাংলাদেশের কৃতজ্ঞতা মালয়েশিয়ার প্রতি
ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ দেশটি দীর্ঘদিন ধরে লাখ লাখ বাংলাদেশিকে বিভিন্ন খাতে কাজের সুযোগ দিয়েছে।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের মানুষ মালয়েশিয়া সম্পর্কে জানে, কারণ তাদের পরিবারের কেউ না কেউ সেখানে কর্মরত।”

এমআর


Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভাঙ্গায় সড়ক ও রেলপথে যান চলাচল স্বাভাবিক Sep 16, 2025
img
মবের মুল্লুক নামে আরো একটি কুখ্যাত বাগধারার কবলে পড়েছে দেশ: গোলাম মাওলা রনি Sep 16, 2025
img
নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ মামলা করলেন ট্রাম্প Sep 16, 2025
img
ব্যক্তি বিবেচনায় এলএনজি কেনা হচ্ছে না, পিটার হাসের কোম্পানি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা Sep 16, 2025
img
নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে সবাই সমান অধিকার পাবে: প্রধান উপদেষ্টা Sep 16, 2025
img
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া ওজোনস্তর রক্ষা সম্ভব নয় : পরিবেশ উপদেষ্টা Sep 16, 2025
img
হ্যান্ডশেক বিতর্কে আইসিসির দ্বারস্থ পিসিবি, প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত Sep 16, 2025
img
এনসিপির মতো নেপালের ছাত্ররা দল করতে যায়নি : রুমিন ফারহানা Sep 16, 2025
img
বাগেরহাটে ৪টি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন অফিস ঘেরাও Sep 16, 2025
img
মা-ছেলের খুনসুটি, ভিডিও করলেন শাকিব Sep 16, 2025
img
বড্ড ছোট বয়সে মা হয়েছি: শ্রাবন্তী Sep 16, 2025
img
তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে চীন Sep 16, 2025
img
রাজনীতির সব হিসাব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে : রনি Sep 16, 2025
img
চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা Sep 16, 2025
img
ছবি নিয়ে যারা কথা বলে তারা বস্তি : রুমিন ফারহানা Sep 16, 2025
img
১৮-১৯ সেপ্টেম্বর সকালের কর্মসূচি স্থগিত করল জামায়াত Sep 16, 2025
img
ডিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় লেনদেন ২০০ কোটির নিচে Sep 16, 2025
img
ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা Sep 16, 2025
img
ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ আ. লীগের ১২ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার Sep 16, 2025
img
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে অব্যাহতি : ট্রাম্পের আদেশ বাতিল করলেন আদালত Sep 16, 2025