পূর্ণ মেয়াদে প্রথম কোনো বিদেশি কোচ হিসেবে কার্লো আনচেলত্তিকে নিয়োগ দিয়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ইতোমধ্যে আসন্ন দুই ম্যাচের দল ঘোষণার পর আরও ব্যাপক পরিসরে দায়িত্ব পালনের পথে আগাচ্ছেন রিয়াল মাদ্রিদের সদ্য সাবেক এই কোচ। তবে এরই মাঝে আনচেলত্তির নিয়োগের সময় ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের (সিবিএফ) বিরুদ্ধে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে ফিফা।
রিয়াল মাদ্রিদ থেকে আনচেলত্তিকে আনতে গত মৌসুম থেকে তোড়জোড় শুরু করেছিল সিবিএফ। যদিও সেবার ব্যর্থ হন ব্রাজিল ফুটবলের প্রধান এডনালদো রদ্রিগেজ। এবার তিনি আরও আটঘাট বেঁধে নামেন। তবে যখন আনচেলত্তি ব্রাজিলের দায়িত্ব নিয়ে রিও ডি জেনিরোতে পা রাখলেন, তখন সিবিএফ সভাপতির দায়িত্বে নতুন মুখ সামির দাউদ। সমস্যাটা হয়েছে আনচেলত্তিকে ব্রাজিলের কোচ করার পথে মধ্যস্থতাকারী দিয়েগো ফার্নান্দেজের কমিশন নিয়ে।
ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, ব্যবসায়ী ও আনচেলত্তির নিয়োগে মধ্যস্থতাকারী দিয়েগো ফার্নান্দেজকে ১.২ মিলিয়ন ইউরো কমিশন দেওয়ার পূর্বাভাস ছিল। যা আরেক ওয়েবসাইট ‘ইউওএল’ প্রতিবেদন প্রকাশের পর নিশ্চিত হয়েছে গ্লোবো। এই পরিস্থিতিতে আনচেলত্তি কোচ হওয়ার ক্ষেত্রে দিয়েগো ফার্নান্দেজকে অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যা নিয়েই মূলত প্রশ্ন ফিফার। তাদের মতে, ফুটবল এজেন্টস নীতিমালার ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের প্রথম ধারা লঙ্ঘন করেছে সিবিএফ।
সিবিএফের কাছে ফিফা ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠিতে লিখেছে, ‘ফিফা ফুটবল এজেন্ট নীতিমালার ৫ অনুচ্ছেদের ১ (বি) ধারা লঙ্ঘন হয়েছে মনে করে আপনার ধারস্থ হয়েছি। আমরা জানতে পেরেছি দিয়েগো ফার্নান্দেজের বর্তমানে পেশাদার এজেন্টস লাইসেন্স না থাকলেও, সিবিএফের সঙ্গে ফুটবল এজেন্টের ভূমিকায় কার্লোর আনচেলত্তির বিষয়ে মধ্যস্থতা করেছেন। যার মাধ্যমে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে ব্রাজিলের কোচ হয়েছেন আনচেলত্তি। আমরা লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া ও ফিফা ফুটবল এজেন্ট এক্সামের বিষয়ে নিশ্চিত হতে কিছু বিষয়ে তথ্য জানতে চাই।’
ফিফার চাওয়া– সিবিএফ যেন ফার্নান্দেজের ব্যাপারে তাদের চাহিদামাফিক তথ্য পাঠায়। যেখানে উল্লেখ্য বিষয়ে সিবিএফের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য ও দিয়েগো ফার্নান্দেজের দায়িত্বের বিষয়টি স্পষ্ট করা; এই সংক্রান্ত সিবিএফের প্রস্তাবনা; ই-মেইল, হোয়াটসঅ্যাপসহ যেকোনো ধরনের যোগাযোগ; লেনদেনের তথ্য; সিবিএফ ও ফার্নান্দেজের চুক্তির তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে ফিফার চিঠির ব্যাখ্যা দিয়েছে সিবিএফ। তারা জানায়, ‘সিবিএফ জানাচ্ছে যে, কার্লো আনচেলত্তিকে আনার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সকল যোগাযোগ এবং তার টেকনিক্যাল কমিটির গোপনীয় শর্ত পুরোনো ম্যানেজমেন্ট বিস্তারিত জানিয়েছে। এই পরিস্থিতির মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণভাবে অনুসরণ করেছে সিবিএফের বর্তমান কমিটি।’
এ ছাড়া নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন ব্যবসায়ী ও ফুটবল এজেন্ট দিয়েগো ফার্নান্দেজও। এক বিবৃতিতে তিনি সিবিএফের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন ও কোচ নিয়োগের সকল বিষয় সিবিএফ এবং ফিফার নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে উল্লেখ করেন। যেখানে কোনো প্রশ্ন তোলারও সুযোগ নেই বলে স্পষ্টভাবে জানান ব্রাজিলিয়ান এই ফুটবল এজেন্ট। দিয়েগো ফার্নান্দেজ ও সিবিএফের সেই ব্যাখ্যায় ফিফা কতটা সন্তুষ্ট হয় সেটাই দেখার বিষয়। এর আগে সিবিএফের আগের সভাপতি এডনালদো রদ্রিগেজকে আদালতের রায়ে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে যদিও কিছু জানায়নি ফুটবলের সর্বোচ্চ এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরপর নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে এসেছে সামির দাউদ নেতৃত্বাধীন সিবিএফের নতুন ম্যানেজমেন্ট।
টিকে/টিএ