দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ হ্রাস পেলে বাড়তে পারে তাপমাত্রা

দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের উষ্ণতম অঞ্চলগুলোর একটি হলেও গত চার দশকে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এখানে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার অনেক কম ছিল। তবে নতুন গবেষণা বলছে, অঞ্চলে বায়ুদূষণ কমলে বাড়বে তাপমাত্রা বাড়বে।

সম্প্রতি প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নতুন গবেষণা বলছে, স্থানীয় বায়ুদূষণ এবং ব্যাপক সেচ ব্যবস্থা এই ধীর গতির প্রধান কারণ। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, বায়ু পরিষ্কার ও পানির ঘাটতি মোকাবিলার উদ্যোগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অস্থায়ী সুরক্ষা হারিয়ে যাবে, যার ফলে তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে পারে।

গবেষণা বলা হয়েছে, ১৯৮০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতি দশকে তাপমাত্রা বেড়েছে মাত্র ০.০৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে বিশ্বব্যাপী স্থলভাগে গড়ে বৃদ্ধির হার ছিল ০.৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এতে বলা হয়েছে, শিল্পদূষণ থেকে উৎপন্ন অ্যারোসল সূর্যের আলোকে আংশিকভাবে আটকে দিয়েছে, আর ব্যাপক সেচ ব্যবস্থা বাষ্পীভবনের মাধ্যমে জমিকে ঠান্ডা রেখেছে। এই দুটি কারণ ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি ‘উষ্ণতার গর্ত’ তৈরি করেছে। তবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং ভূগর্ভস্থ পানির হ্রাসের কারণে এই প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হবে না।

দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশের বেশি বাস করে এবং এই অঞ্চল ইতোমধ্যে চরম তাপপ্রবাহের মুখোমুখি। অ্যারোসল দূষণ কমানো জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এটি লুকানো উষ্ণতাকে উন্মোচন করবে।

একইভাবে, ভূগর্ভস্থ পানির মজুদ কমে যাওয়ায় সেচের মাধ্যমে শীতলকরণ কমবে। এই পরিবর্তনগুলো তীব্র তাপপ্রবাহের ঝুঁকি বাড়াবে, যা জীবিকা, স্বাস্থ্য এবং জলবায়ু সহনশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ২০২৬ সালের মধ্যে পিএম২.৫ কণিকা দূষণ ৪০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য নিয়েছে। সেচের মাত্রা স্থিতিশীল হয়ে যাওয়া বা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় আগামী ২০ বছরে তাপমাত্রা বিগত ২০ বছরের তুলনায় দ্বিগুণ হারে বাড়বে। ২০৪৭ সালের মধ্যে তাপপ্রবাহের দিনগুলো চারগুণ বাড়তে পারে। বর্তমান তাপপ্রবাহ মোকাবিলার পরিকল্পনাগুলো এখনো অপর্যাপ্ত।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডেনিয়েল শ্রাগ বলেন, ভারত এভাবে সেচ চালিয়ে যেতে পারবে না। আর এই মাত্রার বায়ুদূষণও ধরে রাখতে পারবে না।

আরএম/এসএন   

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সৎ মায়ের দিকে কারিশমার ২ সন্তানের অভিযোগ Nov 19, 2025
img
গভীর রাতে হোটেল রমনার পাশের মার্কেটে আগুন Nov 19, 2025
img
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত বাংলাদেশের ভারত সফর Nov 18, 2025
img
আমাদের ফুটবলাররা তরুণদের অনুপ্রেরণা : তারেক রহমান Nov 18, 2025
img
শেখ হাসিনা উপমহাদেশের ইতিহাসে সেরা খুনি : রেজাউল করিম Nov 18, 2025
img
রাজধানীর আশুলিয়ায় চলন্ত বাসে আগুন Nov 18, 2025
img
অনেক আগেই হাসিনার রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে: এমরান সালেহ প্রিন্স Nov 18, 2025
img
ক্লাউডফ্লেয়ারের বৈশ্বিক বিভ্রাট স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে Nov 18, 2025
img
নওগাঁয় বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মশাল মিছিল Nov 18, 2025
img
বলিউডে নেপোটিজম বিতর্কে সরব কারিনা Nov 18, 2025
img
সৌদি আরবের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করবে যুক্তরাষ্ট্র Nov 18, 2025
img
ভোট দিতে চাইলে প্রবাসীদের ৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক Nov 18, 2025
img
বিগ বসের ঘরে চমক দেখালেন গৌরব খান্নার স্ত্রী Nov 18, 2025
img
রাজধানীর সদরঘাটে সেনাবাহিনীর অভিযানে ককটেল উদ্ধার, আটক ৩ Nov 18, 2025
img
জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনের সুযোগ দিলে গণঅধিকার পরিষদ বর্জন করবে: রাশেদ খান Nov 18, 2025
১০০ টেস্টের মাইলফলক স্পর্শ :মুশফিকের প্রশংসায় ভাসলেন তামিম Nov 18, 2025
সিদ্ধান্ত তার নিজের-মুশফিককে ঘিরে প্রধান কোচের মন্তব্য Nov 18, 2025
২৭ লাখ টাকার অভিযোগে আলোচনায় আমিরুল ইসলাম Nov 18, 2025
ফ্লপ ছবির পর সামাজিক মাধ্যমে হেনস্থা, পায়েলের কাহিনী Nov 18, 2025
img
ভারতীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচারে ক্ষুব্ধ হাসনাত, হাইকমিশনারকে তলবের আহ্বান Nov 18, 2025