আসন্ন ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘তাণ্ডব’। সুপারস্টার শাকিব খান অভিনীত ও রায়হান রাফী পরিচালিত এই সিনেমাটি ঘিরে দর্শকের আগ্রহ তুঙ্গে। মুক্তির ঠিক দুই দিন আগে, বৃহস্পতিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয় এক জমকালো সংবাদ সম্মেলন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিনেমার প্রধান শিল্পী, কলাকুশলী ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শাকিব খান, জয়া আহসান, সাবিলা নূর, প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল, রেদওয়ান রনি এবং দেশের বর্ষীয়ান অভিনেতা আফজাল হোসেন। সংবাদ সম্মেলনের মূল আকর্ষণ হয়ে ওঠেন আফজাল হোসেন তার হৃদয়ছোঁয়া বক্তব্যে।
তিনি বলেন, “তাণ্ডব বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সত্যিকারের তাণ্ডব ঘটিয়ে দেবে। আমি বিশ্বাস করি, আগে কোনো বাণিজ্যিক ছবিতে সবকিছু এত সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়নি। এটা শুধু মারপিটের ছবি নয়—এই ছবি দর্শককে বারবার চমকে দেবে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কেউ বুঝে উঠতে পারবে না, সামনে কী অপেক্ষা করছে।”
আফজাল হোসেন জানান, শাকিব খানকে তিনি প্রথম দেখেন ‘শিকারি’ সিনেমায়। এর আগে তাকে টেলিভিশনে গান গাওয়ার সময় এক ঝলক দেখলেও আগ্রহ তৈরি হয়নি। তবে ‘শিকারি’ দেখার পর তিনি মুগ্ধ হন।
তার ভাষায়, “২০০ ছবির পরও যদি কেউ নিজেকে বদলাতে পারে, তাহলে বুঝতে হবে তার মধ্যে অনেক বড় অর্জনের ক্ষমতা আছে। আমরা যারা দীর্ঘদিন অভিনয় করছি, নিজের ভাঙাগড়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি। কিন্তু শাকিব সেটাই পেরেছে।”
তিনি আরও বলেন, “শাকিব খান শুধু সুপারস্টার না, সে একজন লক্ষ্মী ছেলে। ‘লক্ষ্মী’ মানে যে ঘরে আয় নিয়ে আসে, তেমনি সে একজন পরিশ্রমী এবং প্রতিভাবান অভিনেতাও। এই সিনেমায় আমি নিজে অভিনয় করতে চাইনি, রায়হান রাফী জোর করে করিয়েছে। কিন্তু শেষে আমি বুঝতে পেরেছি, এতে আমার লাভই হয়েছে।”
পরিচালক রায়হান রাফীর প্রশংসা করে আফজাল হোসেন বলেন, “রাফী একজন মেধাবী নির্মাতা। শুনেছি, তিনি মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু তার চিন্তা-ভাবনায় যে পরিবর্তন এসেছে, তা অবিশ্বাস্য। তিনি সিনেমা বানাচ্ছেন চোখে দেখা স্বপ্নের মতো। তার পরিচালনায় প্রতিটি চরিত্র ও দৃশ্য নিখুঁতভাবে ফুটে উঠেছে।”
জয়া আহসান ও সাবিলা নূরের অভিনয় নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। জানান, “জয়াকে আমরা অনেক রূপে দেখেছি। তবে এই সিনেমায় তিনি নতুনভাবে ধরা দেবেন। সাবিলার কাজ আমি আগে দেখিনি, তবে তার সঙ্গে শাকিব খানের জুটি এক নতুন চমক নিয়ে আসছে।”
তিনি বলেন, “এই সিনেমার চিত্রনাট্য, অভিনয়, দৃশ্যায়ন—সব কিছু মিলিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ, মানসম্পন্ন বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। আগে কোনো বাংলা সিনেমায় এতটা যত্ন, শৃঙ্খলা এবং মেধার প্রকাশ দেখিনি। যারা বাংলা সিনেমাকে ভালোবাসেন, তারা ‘তাণ্ডব’ দেখে গর্ব অনুভব করবেন।”
আফজাল হোসেন বলেন, “আমি এই সিনেমায় অভিনয় করেছি বলে বলছি না। আমি নির্মাণ দেখেছি, প্রতিটি শিল্পীর কাজ দেখেছি। এই সিনেমা আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের মানকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। সবাইকে ঈদ মোবারক।”
আরএম
