বলি অভিনেতার সঙ্গে আংটিবদল হয়েও সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। তার পর নাকি প্রিয় বান্ধবীর স্বামীর প্রেমেই পুরোদস্তুর হাবুডুবু খেতে শুরু করেছিলেন নব্বইয়ের দশকের সেরা অভিনেত্রীদের তালিকায় থাকা বলি নায়িকা রাভীনা টন্ডন। সেই প্রিয় বান্ধবীর দিকে গ্লাস ছুড়ে মেরেছিলেন তিনি।
‘মোহরা’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর বড় পর্দায় বলিউডের ‘খিলাড়ি’ অক্ষয় কুমারের সঙ্গে রাভীনার জুটি নিয়ে চারদিকে হইহই পড়ে যায়। দুই তারকার সম্পর্কের দুর্দান্ত রসায়ন যেমন অভিনয়জগতে সাড়া ফেলে দিয়েছিল, ঠিক তেমনই ক্যামেরার পিছনে তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে কৌতূহল বাড়তে থাকে।
বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, অক্ষয় এবং রাভীনা চুপি চুপি পারিবারিক অনুষ্ঠানে বাগ্দান পর্ব সেরে ফেলেছিলেন। কিন্তু সে কথা টের পায়নি কাকপক্ষীতেও।
কানাঘুষো শোনা যেতে থাকে যে, বাগ্দানের পর নাকি নিজেকে অভিনয়ের জগৎ থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে নিচ্ছিলেন রাভীনা। অভিনেতার সঙ্গে সংসার করে জীবন কাটিয়ে দেবেন বলেই ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভাবনাও বদলে গিয়েছিল অভিনেত্রীর।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, তিন বছর সম্পর্কে থাকার পর অক্ষয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল রাভীনার। একাংশের দাবি, অক্ষয় নাকি চেয়েছিলেন বিয়ের পর রাভীনা আর যেন অভিনয় না করেন। কিন্তু সংসারের চেয়ে কেরিয়ারকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছিলেন রাভীনা। মতের অমিলের কারণে নাকি তাঁদের সম্পর্ক বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত এগোয়নি।
বলিউডের জনশ্রুতি, অক্ষয়ের প্রচুর মহিলা অনুরাগী ছিলেন।রাভীনার সঙ্গে বাগ্দান সেরে ফেলার কথা প্রচার হয়ে গেলে তাঁর কেরিয়ারে প্রভাব পড়তে পারে এমনটাই ভেবেছিলেন অক্ষয়। তাই বাগ্দানের প্রসঙ্গ বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন দুই তারকা।
মতের অমিলের কারণে অক্ষয় এবং রাভীনার সম্পর্ক ভেঙে গেলেও তাঁদের পেশাগত জীবনে বিচ্ছেদের কোনও ছাপ পড়েনি। সম্পর্কে ইতি টানার পরেও একসঙ্গে ‘বারুদ’ এবং ‘কীমত’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন অক্ষয় এবং রাভীনা।
বলিপাড়ার নামকরা প্রযোজক রমু এন সিপ্পির কন্যা নাতাশা সিপ্পি। রাভীনার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিলেন নাতাশা। তাঁর স্বামী ছিলেন অনিল। প্রিয় বান্ধবীর স্বামীর সঙ্গে পেশাগত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল রাভীনার।
অনিল পেশায় ‘ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউটর’। ২০০৩ সালে ছবির প্রযোজনার সূত্রে রাভীনার সঙ্গে অনিলের সাক্ষাৎ আরও বাড়তে থাকে। কানাঘুষো শোনা যায় যে, অনিল এবং নাতাশার বিবাহিত জীবন সুখের ছিল না। নাতাশার সঙ্গে অনিলের দূরত্ব ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছিল। অন্য দিকে, রাভীনার সঙ্গে প্রেম দানা বাঁধছিল তাঁর।
সম্পর্কের বোঝা টানতে না পেরে নাতাশাকে বিচ্ছেদ দিয়েছিলেন অনিল। বিবাহবিচ্ছেদের পর রাভীনাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। ২০০৩ সালে রাভীনার জন্মদিনেই তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন অনিল। মনের মানুষের সঙ্গে সারা জীবন কাটাতে রাজি হয়েছিলেন রাভীনাও।
২০০৩ সালের নভেম্বর মাসে বাগ্দান পর্ব সেরে ফেলেন অনিল এবং রাভীনা। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজস্থানের উদয়পুর প্যালেসে ঘটা করে তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর নাকি নাতাশার সঙ্গে দেখা হতেই তাঁর দিকে গ্লাস ছুড়ে মেরেছিলেন নায়িকা।
বলিপাড়ার প্রযোজক রীতেশ সিধওয়ানির বাড়িতে নতুন বছর উদ্যাপনের পার্টি ছিল। সেই পার্টিতে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাভীনা এবং অনিল। পার্টিতে গিয়েছিলেন নাতাশাও। রাভীনার দাবি, সেখানে গিয়ে অনিলের সমালোচনা করছিলেন নাতাশা। তা সহ্য করতে না পেরে তাঁর দিকে ফলের রসভর্তি গ্লাস ছুড়ে মেরেছিলেন নায়িকা।
ভরা পার্টিতে প্রিয় বান্ধবীকে আঘাত করেছিলেন বলে অবশ্য কোনও অপরাধবোধ ছিল না রাভীনার। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “ভগবান এবং বাবার পর অনিলই আমার কাছে সেরা পুরুষ। ওর মতো পবিত্র মানুষ হয় না। ওকে অপমান করার অর্থ আমায় অপমান করা। ওকে নিয়ে কোনও খারাপ কথা আমি সহ্য করব না। যা করেছি বেশ করেছি।’’
অন্য দিকে নাতাশা বলেছিলেন, ‘‘আমি তো বুঝতেই পারিনি হঠাৎ কী হল। অনিল এবং রাভীনা নিজেদের মতো ছিল। আমি নিজের মতো আনন্দ করছিলাম। হতে পারে, আমি ওঁর স্বামীর চেয়ে পাঁচ ফুট দূরে ছিলাম তা সহ্য করতে পারেনি রাভীনা। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে এই কাজ করে ফেলেছে। হঠাৎ দেখলাম চিৎকার করে আমার দিকে ও গ্লাস ছুড়ে মারল। আমার আঙুল কেটে রক্তও বেরিয়ে গিয়েছিল।’’
সাময়িক বিরতির পর আবার বড় পর্দায় অভিনয় শুরু করেছিলেন রাভীনা। ওটিটির পর্দায় ওয়েব সিরিজ়েও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সম্প্রতি অভিনয়ে পা রেখেছেন রাভীনার কন্যা রাশা থাডানি। চলতি বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আজ়াদ’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে কেরিয়ার শুরু করলেন তিনি।
টিকে/টিএ