ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনা ফোর্দোতে হামলা করা হবে কিনা সেটা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ইরানের এই সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রই ধ্বংস করতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমরা সেটা (ফোর্দো ধ্বংস) করতে পারি, কারণ কেবল আমরাই তা করতে সক্ষম। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমি সেটাই করব।”
তিনি আরও বলেন, “দেখা যাক কী হয়। সবাই আমাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছে। কিন্তু আমি এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি”। ট্রাম্প এদিন ফের দাবি করেন— ইরান কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পরমাণু অস্ত্র পেতে চলেছিল, যদিও তিনি এর পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
যদিও ইরান বারবারই বলছে, তারা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চায় না। এছাড়া জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাও (আইএইএ) বলেছে, তাদের কাছে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে।
তারপরও ট্রাম্প ইরানকে দোষারোপ করে বলেন, “ওরা পরমাণু চুক্তিতে সই করেনি, এটা ওদেরই দোষ। তবে হয়তো এখনো একটা চুক্তি হতে পারে— যদিও সময় অনেকটাই পেরিয়ে গেছে।”
মূলত ফোর্দো হচ্ছে ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি গভীর পাহাড়ি পারমাণবিক স্থাপনা, যেটি আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে চিহ্নিত। ইরান বলছে, তারা এই স্থাপনায় শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে, কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো এটিকে একটি সামরিক হুমকি হিসেবে দেখে থাকে।
জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক সাবেক পরিদর্শক ডেভিড অলব্রাইট বলেছেন, ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনা ফোর্দো মাটির অন্তত ৮০ মিটার বা ২৬২ ফুট গভীরে অবস্থিত, যা ‘ধ্বংস করা কঠিন’।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি রেডিও ফাইভের সাথে এক সাক্ষাৎকারে এ পরমাণু বিজ্ঞানী জানান, ইসরায়েল হয়তো হামলা চালিয়ে ফোর্দো পরমাণু কেন্দ্রটি দীর্ঘ সময়ের জন্য অকেজো করে রাখতে পারে। তবে তারা এটি পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারবে না। তাদের সেই সক্ষমতা নেই। এই কেন্দ্রটি ধ্বংস করতে লাগবে শক্তিশালী বাঙ্কার বাস্টার বোমা। যেটি শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে।
তিনি বলেন, “এখন যেখানে ইসরায়েল হামলা করছে, আমি বিশ্বাস করি ইসরায়েল ওই স্থাপনা দীর্ঘসময়ের জন্য বন্ধ করাতে পারে। আর যুক্তরাষ্ট্র এটি পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারে।”
আরএম
