বলিউডের অন্যতম প্রতিভাবান অভিনেতা রাজকুমার রাও এবার জীবনের সবচেয়ে উচ্চঝুঁকিপূর্ণ ও বাস্তবভিত্তিক একটি চরিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন। ভারতের ২৬ নভেম্বর, ২০০৮ সালের মুম্বাই জঙ্গি হামলার পটভূমিতে তৈরি এই সিনেমায় তিনি রূপ দিচ্ছেন দেশের অন্যতম আলোচিত পাবলিক প্রসিকিউটর উজ্জ্বল নিকম-এর চরিত্রে, যিনি সেই ভয়ঙ্কর ঘটনার একমাত্র জীবিত ধৃত সন্ত্রাসী আজমল কাসাব-এর বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক মামলা পরিচালনা করেছিলেন।
তবে ছবিটি পূর্ণাঙ্গ জীবনীচিত্র নয়। এটি একটি কোর্টরুম থ্রিলার, যার মূল ফোকাস থাকবে ২৬/১১ মামলার বিচার-প্রক্রিয়া, আদালতের উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ, জাতীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতির চাপ এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনগত কৌশলের উপর। এই চিত্রনাট্যের কেন্দ্রে থাকবে উজ্জ্বল নিকম-এর পেশাগত দক্ষতা, মানসিক দৃঢ়তা এবং রাষ্ট্রের পক্ষ হয়ে দাঁড়ানোর সেই ইতিহাসগড়া মুহূর্তগুলো।
এই প্রজেক্টটি প্রযোজনা করছে মাদডক ফিল্মস। পরিচালনায় রয়েছেন অভিনাশ অরুণ ধাওয়ারে, যিনি আগে ‘পাতাল লোক’, ‘কিলা’ ও ‘থ্রি অব আস’-এর মতো প্রশংসিত কাজ উপহার দিয়েছেন। চিত্রনাট্য রচনা করেছেন সুমিত রায়। পরিচালক ধাওয়ারের আবেগপ্রবণ ও বাস্তবধর্মী গল্প বলার কৌশল এই চলচ্চিত্রকে শুধু থ্রিলার করে তুলবে না, বরং মানবিক আবেগ ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বের দিকটিও ফুটিয়ে তুলবে।
প্রথমে এই চরিত্রে আমির খানকে ভাবা হয়েছিল, তবে ‘সিতারে জমিন পার’-এর শিডিউলজনিত কারণে তিনি ছবিটি না করে দেন। তার পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে রাজকুমার রাওকে, যিনি ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে বলিউডে “এভরিম্যান হিরো” হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।
তবে এ চরিত্র তার পূর্ববর্তী ‘ছোট শহরের’ চরিত্রগুলোর তুলনায় একেবারেই ভিন্ন — অনেক বেশি দায়িত্বপূর্ণ, উচ্চমাপের এবং জাতীয় ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ। ভক্তরা বলছেন, এটাই হতে চলেছে রাজকুমার রাও-এর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উচ্চপ্রোফাইল রোল।
উজ্জ্বল নিকম কে ছিলেন? তিনি ভারতের অন্যতম কৌশলী ও নির্ভীক পাবলিক প্রসিকিউটর। ২৬/১১-র মতো ইতিহাসের অন্যতম বড় জঙ্গি হামলার পর রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে মামলা পরিচালনা করেন, আজমল কাসাব-এর বিরুদ্ধে। তাঁর কোর্টরুম স্ট্র্যাটেজি, সাহসিকতা ও পেশাদারিত্ব দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়েছিল।
এই সিনেমা শুধু একটি আইনি লড়াইয়ের গল্প নয়, এটি একটি সময়ের প্রামাণ্য দলিল — যেখানে আদালতের ভেতরের উত্তেজনা, পর্দার আড়ালের চাপ এবং একটি দেশের বিচারপ্রক্রিয়ার সাহসী দিক উঠে আসবে পর্দায়।
রাজকুমার রাও-এর জন্য এটি শুধুমাত্র আরেকটি চরিত্র নয়, বরং তার অভিনয় জীবনের নতুন অধ্যায়ের শুরু। যখন বলিউড কনটেন্ট-ভিত্তিক বাস্তবধর্মী গল্পের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন এই সিনেমা তাঁর ক্যারিয়ারে একটি মোড় ঘোরানো কাজ হয়ে উঠতে পারে।
আরএম/টিকে
