ইরানের তিন পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। মধ্যপ্রাচ্যের এই লড়াইয়ে আমেরিকা সরাসরি জড়িয়ে পড়ায় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নিজের মাতৃভূমির পরিস্থিতি নিয়ে যন্ত্রণায় কাতর ইরানি অভিনেত্রী মন্দানা করিমি।
সোশাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্টে তিনি লেখেন, “আমি মেসেজের প্রত্যুত্তর দিচ্ছি, নিজেকে ঠিক বলে দেখানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু আমি ঠিক নেই। আমি যা করছি নিজের এবং পরিবারের জন্য। কিন্তু প্রতি মুহূর্ত উদ্বেগে কাটছে। কীভাবে ঠিক থাকব যখন দেখছি শিশুদের মৃত্যু হচ্ছে। শুধু ফিলিস্তিন কিংবা ইরান নয়স গোটা বিশ্বে বারবার মার্কিনি হামলা সত্ত্বেও সকলেই নীরব।আমি বর্তমানে ইরানের বাইরে। রয়েছি ইউরোপে। শান্ত রাস্তা দিয়ে হাঁটছি কিন্তু নিজেকে ভূতের মতো লাগছে।” পরিবারের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে অভিনেত্রী আরও লেখেন, “আমার একটা অংশ যেন বাড়িতেই রয়েছে। যেখানে আমার মা, ভাই, ভাইপো, ভাইজিরা রয়েছে। প্রতি মুহূর্তে যেন মনে হচ্ছে পরের ক্ষেপণাস্ত্রটা হয়তো ভুল করে আমাদের বাড়িতেই আঘাত হানবে।”
![]()

অভিনেত্রীর কাতর আর্জি, “আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমরা কেউ মৃত্যুকে ভয় পাই না। কিন্তু এই অসহায়তা, চোখের সামনে নিজের দেশকে পুড়তে দেখা, আক্রমণকারীদের প্রশংসা সহ্য করা যেন অসহ্য।” অভিনেত্রীর মতে, “ইরান শুধু কোনও দেশ নয়। শুধু শিরোনামে নয়। ইরান আমার মায়ের হাত। ধুলোর মাঝে যেন জুঁইফুলের গন্ধ। যেন ঘুমপাড়ানি গান। সেই ইরানেরই মৃত্যু হচ্ছে। আমি সত্যি ভালো নেই। তাই চুপ করে বসে থাকবেন না। দয়া করে সাহায্য করুন। প্রতিবাদ করুন। আপনি এসব দেখে চুপ করে বসে থাকলে মনে হবে সত্যি কিছু ভুল হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, ভারতীয় সময় অনুযায়ী, রবিবার ভোররাতে ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বোমারু বিমান বি-২। মাটির নিচে অবস্থিত এই স্থাপনাগুলি ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়েছে আমেরিকার বিধ্বংসী বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা। তিন পরমাণু কেন্দ্রে মার্কিন হামলার পরই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনেই-এর এক উপদেষ্টা বলেছিলেন, “এবার আমাদের পালা। আমেরিকার নৌবহরে পালটা হামলা চালাবে ইরান।”
শুধু তাই নয়, বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেল সরবরাহের প্রধান রুট হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল ইরানের তরফে। কয়েকঘণ্টার ব্যাবধানে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করল ইরান।
কেএন/টিকে