১৮ ঘণ্টার টানা অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’

১৮ ঘণ্টার দীর্ঘ ফ্লাইট, একাধিকবার মাঝপথে জ্বালানি সংগ্রহ আর ধাপে ধাপে বিভ্রান্তিকর মহড়া চালিয়ে ইরানের গভীরে অবস্থিত সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর বোমা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই উচ্চ পর্যায়ের অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’।

গতকাল রবিবার সকালে পেন্টাগনের এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান ফোর-স্টার জেনারেল ড্যান কেইন।

পেন্টাগনের ব্রিফিং অনুযায়ী, হামলার চূড়ান্ত সময়সূচি ও কৌশল খুবই নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

মধ্যরাত পার হতেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে পৌঁছান, যেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং পেন্টাগনের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা।

সেখান থেকে তারা সরাসরি অভিযান পর্যবেক্ষণ করেন। একই সময়, মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের প্রত্যন্ত হোয়াইটম্যান এয়ার ফোর্স ঘাঁটি থেকে স্টিলথ প্রযুক্তিসম্পন্ন বিটু বোমারু বিমানগুলো উড্ডয়ন করে ইরানের দিকে। রাতের অন্ধকারে এসব বিমান মাঝপথে একাধিকবার জ্বালানি নেয় এবং বিভ্রান্তিমূলক বিভিন্ন রুট অনুসরণ করে ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশ করে।

জেনারেল ড্যান কেইন বলেন, ‘এই জটিল মিশনে আমরা আমাদের সবচেয়ে উন্নত সামরিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি এবং সব কিছু প্রায় নিখুঁতভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’

পেন্টাগনের দাবি অনুযায়ী, লক্ষ্য ছিল ইরানের সবচেয়ে নিরাপদ এবং সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলো। তবে অভিযান কতটা সফল হয়েছে বা প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কী, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এদিকে, ইরানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি আসেনি।

তবে আন্তর্জাতিক মহল গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, কারণ এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ আরো উঁচুতে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই আক্রমণ কেবল সামরিক নয়, বরং কূটনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। বিশেষ করে এমন সময়ে যখন ইরান তার পারমাণবিক কার্যক্রম জোরালো করছে এবং পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সিনেমা নেই, তবুও বছরে ১৯৫ কোটি আয় কপিলের Jun 23, 2025
img
এবার কাতারে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান Jun 23, 2025
img
‘মনের দুঃখে’ আ.লীগ ছেড়ে এলডিপিতে Jun 23, 2025
img
অস্ত্রোপচার করাবেন জুড বেলিংহ্যাম Jun 23, 2025
img
বিপুল মাদকসহ গ্রেফতার কুয়েতি অভিনেত্রী Jun 23, 2025
img
ছাত্রদলই একমাত্র ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এককভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে : সভাপতি রাকিব Jun 23, 2025
সিনেমার পর টিভিতেও বাজিমাত পুষ্পা ২ Jun 23, 2025
ইরানের মার্কিন হামলার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি Jun 23, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় Jun 23, 2025
img
সাময়িকভাবে আকাশসীমা বন্ধ করলো কাতার Jun 23, 2025
img
বাবার ধর্মই পালন করেন শাহরুখের ছেলে আরিয়ান খান Jun 23, 2025
img
জামিয়াত-ই-তালাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শিবির বিশ্বাসঘাতকতা করেছে : নাছির Jun 23, 2025
বিসিবির আচরণে হতাশ, নেতৃত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত শান্তর! Jun 23, 2025
ইরান ও উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার তাণ্ডব Jun 23, 2025
ইরানের হামলার ফলস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্র বিপদে পড়তে পারে: ডেভিড ফিলিপস Jun 23, 2025
img
‘ট্র্যাজিক কুইন’ মীনা কুমারীর বায়োপিকে কিয়ারা! Jun 23, 2025
img
সাবেক সিইসিকে হেনস্তাকারীরা শনাক্ত, চলছে গ্রফতার অভিযান: পুলিশ Jun 23, 2025
img
২০১৮ সালের নির্বাচনের কুশীলবদের নথিপত্র তলব করে দুদকের চিঠি Jun 23, 2025
img
দ্রুততম সময়ে নির্বাচন না হলে রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়বে : শেখ রবিউল আলম Jun 23, 2025
img
কুমিল্লায় সড়কে নিম্নমানের কাজ, বন্ধ করে দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ Jun 23, 2025