ভারতীয় ক্রিকেটের দুই স্তম্ভ। মাঠে বহু স্মরণীয় মুহূর্ত তৈরি করেছেন একসঙ্গে। কিন্তু একটা সময় এমনও ছিল, যখন তারা একে অপরের মুখ পর্যন্ত দেখতেন না। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও ভিভিএস লক্ষ্মণকে নিয়ে। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপের দল নির্বাচন ঘিরেই তৈরি হয়েছিল সেই দুরুহ সম্পর্কের সমীকরণ। এতদিন পর সেই অধ্যায়ের পর্দা তুললেন স্বয়ং সৌরভ।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, ২০০৩ বিশ্বকাপের দলে জায়গা না পেয়ে এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন লক্ষ্মণ, যে তিন মাস তার সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। ভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, “কাউকে দলের বাইরে রাখলে সে নিশ্চয়ই অখুশি হবে। লক্ষ্মণকেও যখন বিশ্বকাপে নেওয়া হয়নি, ও আমার সঙ্গে তিন মাস কথা বলেনি। পরে আমিই ওর রাগ ভাঙাই।”
বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে খেলতে না পারা একজন প্রতিভাবান ব্যাটারের জন্য যে কতটা হতাশার তা সৌরভও মেনে নিচ্ছেন। তাঁর কথায়, “লক্ষ্মণের মানের একজন ব্যাটার দল থেকে বাদ পড়লে কষ্ট পাওয়া স্বাভাবিক। আমি ওর প্রতিক্রিয়া বুঝতে পারি। সেটা যুক্তিযুক্ত ছিল।”
তবে সব কিছুর পরেও সম্পর্ক জোড়া লেগেছিল। সৌরভ মনে করিয়ে দেন, বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের দুরন্ত পারফরম্যান্সে পরে লক্ষ্মণ নিজেও আনন্দ পেয়েছিলেন। সেই টুর্নামেন্টে ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিল ভারত, যেখানে তারা হার মানে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার কাছে।
বিশ্বকাপ দলে লক্ষ্মণকে না নেওয়ার পেছনে সৌরভ ও তৎকালীন কোচ জন রাইটের ভূমিকার কথাও একসময় প্রকাশ্যে এনেছিলেন তৎকালীন নির্বাচক কিরণ মোরে। তিনি বলেছিলেন, পাঁচ নির্বাচকই লক্ষ্মণকে নিতে চেয়েছিলেন, তবে অধিনায়ক ও কোচের মতামতেই দলে ঢোকা হয়নি হায়দরাবাদি স্টাইলিশ ব্যাটারের।
সবশেষে সৌরভ যোগ করেন, দেশে ফেরার পর আবারও একদিনের দলে ফিরেছিলেন লক্ষ্মণ এবং পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফর্ম করে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছিলেন।
এই ঘটনা যেন আরও একবার মনে করিয়ে দেয়, মাঠের বাইরেও ক্রিকেটের গল্পগুলো কতটা আবেগঘন আর সম্পর্কভিত্তিক।
এসএন