পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সোমবার দেখা গেল এক উত্তাল দৃশ্য। কার্যবিবরণী থেকে বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ির বক্তব্য বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিধানসভা রণক্ষেত্রের রূপ নেয়। প্রতিবাদে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা। পাল্টা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সাসপেন্ড করেন চার বিজেপি বিধায়ককে—শঙ্কর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল, মনোজ ওরাঁও ও দীপক বর্মন।
অধিবেশন কক্ষ থেকে সাসপেন্ড হওয়া বিধায়কদের বের করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় মার্শালদের। তখনই ঘটে উত্তপ্ত পরিস্থিতি—বিধায়কদের সঙ্গে মার্শালদের ধস্তাধস্তি এমনকি হাতাহাতিও শুরু হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অধ্যক্ষ বারবার শান্ত থাকার আবেদন জানালেও তা কোনো কাজেই আসেনি। শেষমেশ বিক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়কেরা ওয়াক আউট করেন।
ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগেই। একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন রাজ্যের এক মন্ত্রীর বক্তব্য না শুনেই সভা ত্যাগ করেছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, ওই দিনের বিজেপি বিধায়কদের বক্তব্য কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হবে। আজ অধিবেশন শুরু হতেই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হন বিজেপি সদস্যরা। বিক্ষোভে সামিল হয়ে কাগজ ছিঁড়ে ফেলেন, স্লোগান তোলেন এবং বিধানসভার নিয়ম উপেক্ষা করে ওয়েলে নেমে আসেন।
এ সময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভায় উপস্থিত হলে ঘটনার বিস্তারিত শুনে তিনি সরাসরি অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনায় যান। সেখানে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে তার বচসাও হয়। তবে শাসক দলের বিধায়কেরা গোটা ঘটনায় নিজেদের আসনে স্থিরই ছিলেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আবারও প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ ও বিধানসভার শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্যের রাজনীতিতে পারদ যে ক্রমেই চড়ছে, আজকের বিধানসভা অধিবেশন তার বড় দৃষ্টান্ত।