২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া সুপারহিট সিনেমা ‘ধুম ৩’ বক্স অফিসে ঝড় তুলেছিল ঠিকই, কিন্তু সেই ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ আবেগঘন উপাদান বাদ পড়েছিল, যা আজও আমির খানের মনে দাগ কেটে আছে। সম্প্রতি নিজের নতুন ছবি ‘তারে জমিন পার’ প্রচারের সময় এক সাক্ষাৎকারে পুরনো স্মৃতিচারণা করেন তিনি। জানান, ‘ধুম ৩’-এর মূল চিত্রনাট্যে এক আবেগঘন অধ্যায় ছিল, যা বাদ না দিলে দর্শকদের হৃদয়ে আরও গভীরভাবে স্থান করে নিতে পারত সিনেমাটি।
মূল চিত্রনাট্যে ছিল জয় দীক্ষিত ও তার স্ত্রী সুইটির বৈবাহিক টানাপোড়েনের গল্প। ‘ধুম’ ও ‘ধুম ২’-তে সুইটির চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রিমি সেন। তবে ‘ধুম ৩’-তে এই চরিত্রটি একেবারে বাদ পড়ে যায়। আমির জানান, চিত্রনাট্যে দেখা যায়, সুইটি তার স্বামী জয়কে ডিভোর্স দিতে চায়, কারণ সে সবসময় কাজে ব্যস্ত থাকে, পরিবারের প্রতি সময় দিতে পারে না, এমনকি জন্মদিন বা করওয়া চৌথের দিনেও নয়।
এই আবেগঘন পরিস্থিতির পর জয় সিদ্ধান্ত নেয়, সে তার স্ত্রীকে ফেরানোর জন্য একটি হানিমুন ট্রিপের পরিকল্পনা করবে, একটি স্বপ্নযাত্রা, যা বিয়ের পরও কখনও সম্ভব হয়নি তাদের জন্য। কিন্তু টুইস্ট আসে তখনই, যখন হানিমুনে যাওয়ার আগ মুহূর্তে জয়কে পাঠানো হয় শিকাগোতে একটি চুরি তদন্তের কাজে। যাওয়ার সময় সুইটি তাকে বলে, “চোরকে না ধরলে বাড়ি ফিরো না।”
এই সংলাপটি আমির খানের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, “এই আর্কটা জয়ের চরিত্রে এক বিশাল আবেগের স্তর যোগ করত। তার সিদ্ধান্তগুলো তখন শুধু কর্তব্যনির্ভর হতো না, হতো ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও টানাপোড়েনের ফলাফল। এই আর্ক বাদ না দিলে সিনেমাটির আবেগ অনেক বেশি গভীর হতো।”
কিন্তু নির্মাতা আদিত্য চোপড়া ও পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ আচার্য (ভিক্টর) মনে করেছিলেন এই অংশ সিনেমার মূল গতিপথে প্রয়োজনীয় নয়, তাই তারা শেষমেশ তা বাদ দেন। কিন্তু আমির একেবারেই একমত হতে পারেননি এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে।
বক্স অফিসে ছবিটি বিশাল সাফল্য পায়, শুধুমাত্র ভারতে আয় করে প্রায় ২৮৪ কোটি টাকা, বিশ্বব্যাপী আয় ছাড়ায় ৫৫৬ কোটি টাকা। তবে দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পায় ছবি। অনেকেই বলেছিলেন, ‘ধুম ৩’-তে ভিজ্যুয়াল জাঁকজমক ছিল, অ্যাকশন ছিল, কিন্তু ছিল না হৃদয় ছোঁয়ার মতো আবেগ।
আমিরের এই খোলামেলা বক্তব্য নতুন করে আলোচনায় এনেছে ‘ধুম ৩’-কে। শুধু একটি ব্লকবাস্টার সিনেমা নয়, অনেকের কাছে এটি এখন এক ‘মিসড অপারচুনিটি’, একটি সম্ভাবনা, যা ঠিকভাবে কাজে লাগানো গেলে ইতিহাসে অন্যরকম জায়গা করে নিতে পারত।
এসএম/টিকে