ভারতীয় সংগীতাঙ্গনের দুই কিংবদন্তি অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান এবং প্রখ্যাত গায়িকা অনুরাধা পড়োয়াল। তাদের দীর্ঘ কর্মজীবনে হাতেগোনা কয়েকটি গানে একসঙ্গে কাজ করেছেন। ‘কিসসা হাম লিখেঙ্গে’ এবং ‘কিসমত সে তুম হামকো মিলে হো’— এই দুটি গানই শ্রোতাদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করলেও এরপর তাদের আর একসঙ্গে কাজ করতে দেখা যায়নি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অনুরাধা পড়োয়াল এ আর রহমানের শিক্ষাদান পদ্ধতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তার মতে, রহমান কেবল নিজেই একজন অসাধারণ শিল্পী নন বরং তিনি তার চারপাশের মানুষকেও সংগীতের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করতে চান।
অনুরাধা জানান, তার চোখে এ আর রহমান ‘সেরা সংগীত পরিচালকদের’ একজন। তিনি বলেন, ‘সংগীত আলোর মতো। যখনই আপনি গান গাইতে শুরু করবেন তখন আপনার চারপাশ উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। আমি রহমানজির মধ্যে এই বিষয়টি দেখেছি। এটি কেবল তার নিজের কাজের ক্ষেত্রে নয়। তিনি চান তার চারপাশের লোকেরাও সংগীতের মাধ্যমেই সমৃদ্ধ হোক।’
রহমানের গান শেখানোর পদ্ধতি প্রসঙ্গে অনুরাধা একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। তার কথায়, ‘একবার আমি তার স্টুডিওতে গিয়ে দেখলাম একটি খুব ছোট মেয়ে তার রেকর্ডিং সেশনে এসেছে। খুব সুন্দরভাবে গান গাইছিল সে কিন্তু যেটা চমকে দেওয়ার মতো সেটা হলো অতটুকু মেয়েকেও কী অসাধারণভাবে সম্বোধন রহমানের।’
‘যেটা আমায় অবাক করেছে। ‘ম্যাম আপনি তো এই ভাবে গাইছেন। আপনার একটু অন্য ভাবে গান গাওয়া উচিত।’ এ আর রহমান এমনভাবে তাকে বুঝিয়েছেন যেটা কিন্তু সত্যিই খুব বড় ব্যাপার।’
অনুরাধা আক্ষেপ করে বলেন, ‘সাধারণত যখন কেউ বড় জায়গায় পৌঁছে যায় তখন এমনভাবে হাতে ধরে জুনিয়রদের শেখানো বা দিকনির্দেশনা দেওয়ার কথা অনেকে ভাবতেই পারেন না। কিন্তু এ আর রহমানের মতো শিল্পী যে তার ছাত্রদের এমনভাবে শেখাচ্ছেন, এটা ভেবেই তিনি খানিকটা অবাক হয়েছেন।’
অনুরাধার কথায়, ‘রহমানের স্কুলে যারা গান শেখেন, তাদের একেবারে অন্য ঘরানায় প্রস্তুত করা হয়। সকলে এসব জানেও না। সবচেয়ে বড় কথা, রহমানের খুব সহজ-সরল-সাধারণ জীবন। এই জন্যই হয়তো তার গানে এতটা প্রাণ খুঁজে পাওয়া যায়।’
এফপি/ টিকে