ইরানে মার্কিন হামলার নতুন তথ্য প্রকাশ পেন্টাগনের

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের চালানো ‘ম্যারাথন বোমা হামলা’ সম্পর্কে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন। তবে এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে কতটা ক্ষতি করেছে—এ প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর এখনও মেলেনি।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই ব্রিফিং ‘আকর্ষণীয় ও অকাট্য’ হওয়ার কথা ছিল। প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘ইতিহাসের সবচেয়ে গোপন এবং সবচেয়ে জটিল সামরিক অভিযান’ চালিয়েছে।

জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন এই অভিযানের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ তুলে ধরেন। তার ভাষায়, বোমাগুলো তৈরিতে সুপার কম্পিউটারের সর্বোচ্চ ব্যবহারের পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন অভিজ্ঞ অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা।

৩৭ ঘণ্টাব্যাপী অভিযানে অংশ নেন বিমানবাহিনীর সক্রিয় সদস্য, মিসৌরি এয়ার ন্যাশনাল গার্ড এবং ক্যাপ্টেন থেকে কর্নেল পদমর্যাদার নারী-পুরুষ সদস্যরা। জেনারেল কেইন স্মরণ করিয়ে দেন, শুক্রবার কাজে বের হওয়া সেই ক্রুরা জানত না তারা আদৌ বাড়ি ফিরতে পারবে কি না।

জেনারেল কেইন জানান, ইরান হামলার কয়েকদিন আগেই ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাকে পাহাড়ের আরও গভীরে স্থানান্তরের চেষ্টা করে। তবে মার্কিন গোয়েন্দারা আগেভাগেই তা জেনে প্রস্তুতি নিয়েছিল। এই হামলায় ব্যবহৃত ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাঙ্কার-বাস্টার বোমার এটি ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে প্রথম ব্যবহার। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কীভাবে বোমাগুলো বাঙ্কারের ভেতরে প্রবেশ করে বিস্ফোরিত হয়েছে।

যদিও পেন্টাগন হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে, তবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া হয়নি। কেইন ও হেগসেথ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর এড়িয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ওপর দায় চাপিয়েছেন।

প্রাথমিক বিশ্লেষণে ধারণা করা হয়েছিল, হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূল উপাদান ধ্বংস হয়নি, বরং কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে পড়েছে। যদিও পরে সিআইএ পরিচালক দাবি করেন, স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়েছে এবং পুনর্গঠনে কয়েক বছর লেগে যাবে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এ হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। কিন্তু হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কীভাবে তিনি এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছালেন—সেই প্রশ্নে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
হাসিনা-কাদেরসহ ৫৪৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জশিট Nov 11, 2025
img
রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ১৭০৩ মামলা Nov 11, 2025
img
বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচন করতে আগ্রহী জাতীয় পার্টি Nov 11, 2025
img
জ্বালাও-পোড়াও করে আ. লীগ প্রমাণ করছে তাদের নেশাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড: শফিকুল আলম Nov 11, 2025
img
দুই-তিন দিনের মধ্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে পারে : জাহেদ উর রহমান Nov 11, 2025
img
আসন্ন নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে না : শিশির মনির Nov 11, 2025
img
জুলাই সনদ ইস্যুতে তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে বার্তা দিলেন মোশাররফ Nov 11, 2025
img
প্রাথমিকের ৬৫ হাজার প্রধান শিক্ষকের জন্য সুখবর Nov 11, 2025
img
বিশ্বকাপের আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে আফগানিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ Nov 11, 2025
img
ভুটান সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি Nov 11, 2025
img
আওয়ামী লীগের অবরোধ কর্মসূচির জবাবে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা জুলাই ঐক্যের Nov 11, 2025
img
নোংরামি ছড়ানো মানসিক অসুস্থতা : স্পর্শিয়া Nov 11, 2025
img
যারা সংস্কারের বিপক্ষে তাদের সঙ্গে কোনো জোট নয়: হাসনাত Nov 11, 2025
img
৫ দফা দাবিতে সমাবেশ করছে জামায়াতে ইসলামীসহ আট দল Nov 11, 2025
img

প্রেস সচিব

দেশে রাজনৈতিক হাওয়া দেখেই আওয়ামী ফ্যাসিজম পার্টি নাশকতার চেষ্টা করছে Nov 11, 2025
img
লাস্যময়ী রূপে দর্শনা! Nov 11, 2025
img
জোর করে ঐকমত্য চাপিয়ে দেওয়া যায় না : রুমিন ফারহানা Nov 11, 2025
img
রাজধানীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আকাশ গ্রেপ্তার Nov 11, 2025
img
মিডিয়াগুলো ‘আ.লীগের আগুন সন্ত্রাস’ লিখতে লজ্জা পাচ্ছে: ফয়েজ আহমদ Nov 11, 2025
img
গুজব ও বিভ্রান্তি প্রতিরোধে শুরু হলো এনসিএসএর বিশেষ সেলের কার্যক্রম Nov 11, 2025