রাশিয়ার পর আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি দিচ্ছে আরও যেসব প্রভাবশালী দেশ

২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো কোনো দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দিল। দেশটি হলো রাশিয়া। এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে একসময় তালিবান বিরোধী অবস্থান থেকে নাটকীয়ভাবে সহযোগিতার পথে গেল ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বাধীন মস্কো।

২০২১ সালের আগস্টে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সুযোগে আফগান রাজধানী কাবুল দখল করে তালিবান, ক্ষমতাচ্যুত হয় আশরাফ গনির সরকার।

সেই সময় বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই তালিবানের শাসন মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালেও অনেকেই গোপনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখে।

তবে রাশিয়া প্রথম দেশ হিসেবে প্রকাশ্যে তালিবানকে স্বীকৃতি দিল।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এই এদিকে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই), কাবুলে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকী-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং মস্কোর এই সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

যদিও এখনো তালিবান সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি জাতিসংঘ বা পশ্চিমা জোটগুলো, কিন্তু বাস্তবতা হলো—চীন, পাকিস্তান, ইরানসহ একাধিক দেশ কূটনৈতিকভাবে তালিবান সরকারের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ বজায় রেখেছে।

চীন তালিবান সরকারের আগমনের আগেই শান্তি আলোচনার জন্য ২০১৯ সালে তালিবান নেতাদের আতিথ্য দেয়। পরবর্তীতে চীন ও তালিবান সরকারের মধ্যে অর্থনৈতিক বিনিয়োগসহ সম্পর্ক আরও গভীর হয়।

পাকিস্তান এপ্রিলে তাদের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার-কে কাবুলে পাঠায়, যেখানে তালিবান সরকারের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়।

ইরান-ও তালিবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকী-কে তেহরান আমন্ত্রণ জানায়, যেখানে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পিজেশকিয়ান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার এই পদক্ষেপ একটি ভূরাজনৈতিক কৌশল। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন-এর উপপরিচালক কোভিদ তানেজা বলেন, আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলো তালিবানের সাথে যুক্ত না হয়ে নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্বার্থ বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব। তিনি বলেন, “রাশিয়ার স্বীকৃতি দেখে মধ্য এশিয়ার কিছু দেশ ও চীনও একই পথ অনুসরণ করতে পারে।”

তালিবান সরকারের এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যদিও মানবাধিকার পরিস্থিতি, নারীর শিক্ষা ও অংশগ্রহণের বিষয়গুলো এখনো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তালিবানের স্বীকৃতির পথে বড় বাধা।

এমআর/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ঝিনাইদহে পিকআপ ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে প্রাণ গেল ২ জনের Jul 08, 2025
img
‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চেয়ে সাংবাদিকদের থামিয়ে দেয়া সভ্য রাজনীতি নয়’ Jul 08, 2025
img
ভোলায় যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ আ. লীগের তিন নেতা আটক Jul 08, 2025
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে যা বললেন হাসনাত Jul 08, 2025
img
পরপর ২ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ Jul 08, 2025
ল্ক ইস্যুতে বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের জন্য আলোচনার সুযোগ রাখলেন ট্রাম্প Jul 08, 2025
রাতের আঁধারে জোর করে যেভাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হয়েছিলেন জিএম কাদের! Jul 08, 2025
‘ফিলিস্তিন কখনোই স্বাধীন হবে না’—নেতানিয়াহু Jul 08, 2025
img
১৪৬ কোটি টাকায় ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার Jul 08, 2025
img
ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগের ২ নেতা গ্রেফতার Jul 08, 2025
মহররম মাসের প্রচলিত কুসংস্কার Jul 08, 2025
জাতীয় দলে ফিরলেন সাইফুদ্দিন, এবার কি নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন Jul 08, 2025
img
গাজাবাসীকে জোর করে সরানো নিয়ে ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর আলাপ Jul 08, 2025
img
এবার অভিনেত্রী নয়নতারার বিরুদ্ধে ৫ কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা Jul 08, 2025
img
২ অক্টোবর থেকে সচিবালয়ে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক নিষিদ্ধ Jul 08, 2025
img
৪ মামলায় গ্রেফতার আসাদুজ্জামান নূর Jul 08, 2025
img
গানের জগতে ঝড় তুলেছে ‘গুলবাহার’, মুগ্ধ সংগীতপ্রেমীরা Jul 08, 2025
img
সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলতে হবে : ফয়জুল করীম Jul 08, 2025
img
মহাদেবের ভক্ত আদাহ, তাই ভয় নেই সুশান্তের ফ্ল্যাটে থাকতে Jul 08, 2025
img
ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরানোর পরিকল্পনা ট্রাম্পের Jul 08, 2025