বার্বাডোজের পর গ্রেনাডাতেও পাত্তা পেলো না স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অজি বোলারদের তোপের মুখে ১৩৩ রানের বিশাল পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো ক্যারিবিয়ানদের। সফরকারীদের দেওয়া ২৭৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে চতুর্থ দিনেই ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় রসটন চেজের দল। এই জয়ে এক ম্যাচ রেখেই টেস্ট সিরিজ নিজেদের নামে করে নিলো মাইটি অজিরা।
গ্রেনাডায় টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া অস্ট্রেলিয়া প্রথম দিনেই পরে ব্যাটিং বিপর্যয়ে। স্বাগতিক পেস আক্রমণের সামনে দিশেহারা হয়ে পড়ে অজি টপ অর্ডার। ১১০ রান তুলতেই বিদায় নেয় প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান। তবে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে এলেক্স ক্যারি ও বিউ ওয়েবস্টারের ১১২ রানের সংগ্রহ অজিদের ম্যাচে ফিরতে সহায়তা করে। দুজনেই তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি। ওয়েবস্টারের ইনিংস শেষ হয় ৬০ রানে এবং ক্যারি করেন ৬৩ রান। আর তাতে করে স্কোরবোর্ডে ২৮৬ রান তুলতে সক্ষম হয় অজিরা। স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট তুলে নেন আলজারি জোসেফ।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ক্যারিবিয়ানরাও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। টপ অর্ডারে জন ক্যাম্পবেলের ৪০ এর পর মিডল অর্ডারে অর্ধশতকের দেখা পান ব্রেন্ডন কিং। তবে কিংয়ের ৭৫ রান ছাড়া পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলো ক্যারিবিয়ান মিডল অর্ডার। শেষ দিকে আলজারি জোসেফের ২৭ ও শামার জোসেফের ২৯ রানের দুটি কার্যকরী ইনিংসে ২৫৩ রান তুলতে পারে স্বাগতিকেরা। অজিদের হয়ে নাথান লায়ন সর্বোচ্চ তিনটি এবং হ্যাজেলউড ও কামিন্স নেন দুটি করে উইকেট।
৩৩ রানের লিড পাওয়া অজিদের ওপেনিং জুটি দ্বিতীয় ইনিংসেও ছিলো ব্যর্থ। স্যাম কনস্টাস ও উসমান খাজা দুজনেই বিদায় নেন দুই অঙ্কে পৌঁছানোর আগেই। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ক্যামেরুন গ্রিন ও স্টিভেন স্মিথের কল্যাণে কিছুটা স্বস্তির দেখা পায় অস্ট্রেলিয়া। দুজনে মিলে দলের খাতায় যোগ করেন ৯৩ রান। ৫২ রানে গ্রিনের বিদায়ের পর ট্রাভিস হেডের সাথে আরো ৫৮ রানের জুটি গড়েন স্মিথ। শেষ পর্যন্ত ৭১ রানে আউট হয়ে যান স্মিথ। লোয়ার অর্ডারে ক্যারির ৩০ ছাড়া বলার মতো আর কেউই তেমন রান করতে পারেনি। ফলে ২৪৩ রানে গিয়ে থামে সফরকারীদের ইনিংস।
২৭৭ রানের লক্ষ্য টপকাতে হলে বাংলাদেশের গড়া রেকর্ড টপকাতে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। কেননা গ্রেনাডার এই মাঠে ২০০৯ সালে ২১৭ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতেছিলো টাইগাররা, যা এই মাঠে সর্বোচ্চ। তবে সেটা আর শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকদের পক্ষে সম্ভব হলো না। ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে মাত্র ৩৪.৩ ওভারেই গুটিয়ে যায় রসটন চেজ-ব্রেন্ডন কিংরা। মিচেল স্টার্কের গতি আর নাথান লায়নের ঘূর্ণির কাছে হার মেনে ১৪৩ রানেই অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকেরা। ফলে ১৩৩ রানের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া। স্টার্ক ও লায়ন দুজনেই তুলে নেন তিনটি করে উইকেট। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এক ম্যাচ হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করলো কামিন্স বাহিনী। সিরিজের শেষ টেস্টে আগামী ১২ জুলাই জ্যামাইকার কিংস্টনে মাঠে নামবে এই দুই দল।
ইউটি/টিকে