এই সময়ে যখন বলিউডে নতুন মুখ, তাজা গল্প, আর কনটেন্টভিত্তিক সিনেমাই দর্শকের চাহিদার কেন্দ্রে— তখন এক তারকার ক্যারিয়ার সত্যিই প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। তিনি আদিত্য রায় কাপুর। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি বক্স অফিসে সফলতা দেখাতে পারেননি। তবু অদ্ভুতভাবে বারবার বড় বাজেটের সিনেমায় তাকে নেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ ‘মেট্রো ইন ডিনো’ মুক্তির দিনেই মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাহলে প্রশ্ন উঠে যায়, আদিত্য রায় কাপুর এখনও কীভাবে বলিউডের ভরসার মুখ?
২০১৩ সালে ‘আশিকি ২’-এর সাফল্যে আদিত্যর নাম রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু সেই উড়ান যেন বহু আগেই থেমে গেছে। এরপর আসে একাধিক সিনেমা— ‘ফিতূর’, ‘ওকে জানু’, ‘মালাং’, ‘গুমরাহ’, ‘দ্য নাইট ম্যানেজার’ কিংবা সদ্যপ্রকাশিত ‘মেট্রো ইন ডিনো’— যার একটিও আলোড়ন তুলতে পারেনি। শুধু ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’-তে পার্শ্বচরিত্রে কিছুটা নজর কাড়লেও সেখানেও মূল আকর্ষণ ছিলেন রণবীর ও দীপিকা। অর্থাৎ, এক দশকে আদিত্যর ঝুলিতে কোনো ধারাবাহিক হিট নেই।
তাহলে তাকে নিয়েই বা কেন এত বাজি ধরছেন প্রযোজকরা?
বিশ্লেষকরা বলছেন, আদিত্যর ‘সেফ’ ইমেজ তাকে বারবার সুযোগ এনে দিচ্ছে। তিনি বিতর্ক থেকে দূরে থাকেন, মিডিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো, চেহারায় আকর্ষণীয়, আর প্রযোজকরা তাকে এমন এক মুখ হিসেবে দেখেন যিনি গল্পকে ছাপিয়ে যান না— মানে, গল্পের কেন্দ্রে থাকেন না, তাই এনসেম্বল কাস্টে তাকে রাখা নিরাপদ। আবার অনেকে বলছেন, আদিত্যর সিনেমা প্রায়শই স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করে ক্ষতি পুষিয়ে নেন প্রযোজকরা।
তবে বর্তমান বলিউড বাস্তবতায় এ ধরনের কাস্টিং সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যেখানে থিয়েটার বন্ধ হচ্ছে, দর্শক যাচ্ছেন নির্বাচিত সিনেমা দেখতে, সেখানে একজন “০ হিট” তারকার পেছনে ৬০ কোটির বাজি নেহাত বিলাসিতা বলেই মনে করছেন অনেকে। তারা বলছেন, এখন দরকার নতুন প্রতিভা, শক্তিশালী স্ক্রিপ্ট আর সাহসী পরিচালনা। রূপের চেনা ফর্মুলা আর কাজ করছে না।
তবে আদিত্যর ক্যারিয়ার এখনও শেষ হয়ে যায়নি। চাইলে তিনি নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে পারেন। হয়তো শাহরুখ খানের ‘স্বদেশ’ কিংবা সাইফ আলি খানের ‘ওমকারা’র মতো চরিত্রের দিকে নজর দিলে পাল্টে যেতে পারে ছবি। নতুবা সহ-ভূমিকায় ফোকাস করে নিজের জায়গা ধরে রাখতে পারেন।
শেষ কথা হলো, চেহারায় মন জয় করলেও এখনকার বলিউড দর্শক গল্প চায়, পারফরম্যান্স চায়। আর যদি ইন্ডাস্ট্রি সেই সত্যিটা না মানে, তবে আদিত্য রায় কাপুরের মতো ‘ফ্লপ-প্রুফ’ তারকারা বারবার উঠে আসবে, কিন্তু বক্স অফিস পড়তেই থাকবে।
এসএন