ঘড়ি কখনও শুধু সময় দেখায় না, কখনও কখনও তা একটা জাতির সম্ভাবনার প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। ভারতের অন্যতম সফল কনজিউমার ব্র্যান্ড ‘টাইটান’-এর জন্ম, লড়াই আর স্বপ্নের কাহিনি এবার আসছে পর্দায়। ছয় পর্বের এই বায়োপিক সিরিজের নাম ‘মেড ইন ইন্ডিয়া – এ টাইটান স্টোরি’। আর যিনি এই স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু জেআরডি টাটার ভূমিকায়, তিনি আর কেউ নন — কিংবদন্তি অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহ।
টাইটান ঘড়ির ইতিহাস মানেই এক যুগান্তকারী প্রয়াসের দলিল। একদা সরকারি নিষ্ক্রিয় পরিবেশে দাঁড়িয়েও কেমন করে সাহসিকতা, উদ্ভাবনী শক্তি আর নেতৃত্ব মিলিয়ে গড়ে উঠেছিল ভারতের নিজস্ব ঘড়ির ব্র্যান্ড, তা-ই ধরা পড়বে এই সিরিজে। পরিচালক রবি গ্রেওয়ালের কৌশলী পরিচালনায় এবং করণ ব্যাসের চিত্রনাট্যে উঠে আসছে এক বর্ণময় বাস্তবতা, যা শুধুই কর্পোরেট নয়, বরং মানবিকও।
সিরিজের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে বিনয় কামাথ রচিত ‘Titan: Inside India’s Most Successful Consumer Brand’ বইটি। এখানে শুধু কোম্পানির সফলতা নয়, জেআরডি টাটা ও টাইটানের প্রথম এমডি জেরক্সেস দেসাই-এর মতো ব্যক্তিত্বদের সৃষ্টিশীল দৃষ্টিভঙ্গিও জায়গা পেয়েছে। দেসাই চরিত্রে অভিনয় করছেন জিম সারভ, যিনি ইতিমধ্যেই সিরিয়াস ও বাস্তবধর্মী চরিত্রে পারদর্শিতার প্রমাণ রেখেছেন।
এই সিরিজ কেবল কর্পোরেট সাফল্যের ছক ধরে এগোয় না। বরং এর গল্পে দেখা যায় ১৯৮০-এর দশকে ভারতের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও সামাজিক বাধাকে অতিক্রম করে কেমন করে ‘বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা ঘড়ি’ তৈরি করা যায়, সেই চেষ্টা ও তাৎপর্য। প্রতিটি চরিত্র, প্রতিটি মুহূর্তে থাকে লড়াই আর অনুপ্রেরণার ছাপ।
সিরিজের সঙ্গে জুড়ে গেছেন আরও কিছু প্রতিশ্রুতিশীল মুখ — বৈভব তাতওয়াড়ি, নামিতা দুবে, কাভেরি শেঠ এবং লক্ষবীর সরণ। সবার মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে এক বাস্তবধর্মী শিল্পকর্ম, যা কেবল উদ্যোক্তা নয়, প্রত্যেক দর্শককেই ছুঁয়ে যাবে।
টাইটান-এর বর্তমান এমডি সি. কে. ভেঙ্কটরামণ বলেছেন, এই সিরিজ অংশগ্রহণকারীদের নিষ্ঠার সত্যিকারের দলিল। আর প্রযোজক ভূষণ কুমার একে বলছেন একটি গর্বের প্রজেক্ট, যা ইতিহাসকে সম্মান জানায়।
২০২৫ সালে অ্যামাজন এমএক্স প্লেয়ার-এ মুক্তি পাবে এই সিরিজ। অনেকেই বলছেন, এটি হতে চলেছে ভারতীয় স্ট্রিমিং জগতের নতুন মাইলফলক — কারণ এটি শুধুই একটি কোম্পানির উত্থানের গল্প নয়, বরং এক সাহসী স্বপ্নের উদযাপন।
এসএন