কুর্দিস্তানে বিরাট সাফল্য অর্জন করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিপেস তাইয়েপ এরদোয়ান। দেশটির বিরুদ্ধে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) ৪০ বছর ধরে চালিয়ে যাওয়া সশস্ত্র সংগ্রামের অবসান হয়েছে। গোষ্ঠীটি অবশেষে নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দীর্ঘকাল ধরে চালিয়ে যাওয়া এ সংগ্রামে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১১ জুলাই) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় কুর্দিস্তান অঞ্চলে একটি ছোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে ২০ থেকে ৩০ জন পিকেকে যোদ্ধার অস্ত্র ধ্বংস করার কথা রয়েছে। কোনো সরকার বা কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ না করে তারা এমন কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। এই প্রতীকী প্রক্রিয়াটি কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে।গ্রীষ্মকালজুড়ে এটি চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এ ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি আমাদের দেশের পায়ে চাপানো রক্তাক্ত শৃঙ্খল সম্পূর্ণরূপে ছিঁড়ে ফেলার মতো একটি পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্ত গোটা অঞ্চলের জন্য সুফল বয়ে আনবে।
পিকেকের কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালান এক ভিডিও বার্তায় এই উদ্যোগকে ‘সশস্ত্র সংঘর্ষ থেকে গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও আইনের পথে স্বেচ্ছামূলক রূপান্তর’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি এটিকে ‘ঐতিহাসিক অর্জন’ বলে অভিহিত করেছেন।
এর আগে গত মে মাসে চার দশকের সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের বিলুপ্ত ঘোষণা করে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। গোষ্ঠীটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা সব ধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করছি। তুর্কি-কুর্দি সম্পর্ককে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার সময় এসেছে।
সংগঠনটি আরও জানায়, এখন থেকে কুর্দি রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও একটি গণতান্ত্রিক কুর্দি জাতি গঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। পিকেকে তাদের ‘ঐতিহাসিক মিশন’ শেষ করেছে।
পিকেকের এই সিদ্ধান্ত তুরস্ক ও ইরাকের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে প্রায় ৪০ বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান টানল। এই সংঘর্ষে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়।
উল্লেখ্য, পিকেকে প্রধান আবদুল্লাহ ওজালান। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্কে যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক বিবৃতিতে সব সশস্ত্র গ্রুপকে ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। এর ধারাবাহিকতায় এই বিলুপ্তির ঘোষণা আসে।
আরআর/টিকে