প্রায় দুই দশক ধরে পেশাদার ক্রিকেট খেলছেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও দীর্ঘ সময় তিনি এক নম্বর অলরাউন্ডার ছিলেন। সমৃদ্ধ এই ক্যারিয়ারে জাতীয় দল ছাড়াও খেলেছেন বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে। সেসবের কোথাও সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেনি। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বিকেলে এসে বাঁ-হাতি এই স্পিনারের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে ইংল্যান্ডের কাউন্টিতে অভিযোগ উঠে।
গেল বছরের সেপ্টেম্বরের কথা; সে সময় কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে টেস্ট খেলতে যান সাকিব। প্রায় ১৩ বছর পর এই টুর্নামেন্টে একটি ম্যাচ খেলেছেন সারের হয়ে। সামারসেটের বিপক্ষে সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করেন তিনি। সেই ম্যাচেই সাকিবের বোলিং নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আম্পায়াররা। পরবর্তীকালে অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়ে দুইবারই তিনি অনুত্তীর্ণ হন। তারই ধারাবাহিকতায় সব ধরনের ক্রিকেটে তার বোলিং নিষিদ্ধ করা হয়।
পরে ইংল্যান্ডের লাফবরো বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে তৃতীয়বার বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন সাকিব। এর গিয়ে দেশটিতে গিয়ে পরীক্ষার আগে তিনি যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ওই সময় পাশে ছিলেন সাকিবের ছোট বেলার সতীর্থ এবং বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলা সিরাজউল্লাহ খাদেম নিপু। তিনি বর্তমানে খেলছেন পর্তুগাল জাতীয় দলের হয়ে। সে সময় তিনি লন্ডনে নিয়মিত সাকিবের প্রস্তুতি দেখেছেন।
গতকাল গ্লোবাল সুপার লিগে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে মাঠে নেমে ব্যাট-বলে সমান তালে জ্বলে ওঠেন সাকিব। ৪ উইকেট শিকারের পাশাপাশি করেছেন ৫৮ রান। ইংল্যান্ডে থাকা সিরাজও বন্ধুর এমন পারফরম্যান্সে বেশ খুশি।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, সাকিবের বোলিং অ্যাকশনে সমস্যাটা হয়েছিল চারদিনের ম্যাচটাতে প্রচুর বোলিং করার কারণে। ওর কাঁধে অনেক ক্লান্তি চলে এসেছিল। যে কারণে হাতটা একটু বেঁকে যায়। সাকিবের ন্যাচারাল বল ছিল সেভেনটিন বা নাইন্টিনে। এখন আবার ওই অ্যাকশন ফিরে পেয়েছে। তাই বোলিংটা ভালো হচ্ছে।
লাল বলের দীর্ঘতম সংস্করণে খেলা নিয়ে সিরাজ বলেন, যখন প্রচুর লাল বলে ক্রিকেট খেলবেন তখন আপনার হাতের ওপর অনেক প্রেসার পড়বে। আমিও ক্রিকেটার, এটা বুঝি। আর যখন ৩০-৪০ ওভার বোলিং করবেন তখন আপনার শরীরটা এমনিতে ক্লান্ত হয়ে যায়, তখন হাত বেঁকে যেতে পারে।’ ব্যাটিংয়েও সাকিবকে ছন্দে দেখা গেছে গ্লোবাল সুপার লিগে।
বিষয়টি নিয়ে সিরাজের ভাষ্য- সে ইংল্যান্ডের ইনডোরে ব্যাটিং করত। জাস্ট টাইমিংটা প্রকাশ করত, একই সঙ্গে ফোকাস রাখত ব্যালেন্স ঠিক রাখার ওপর। সে এতদিন যে কষ্টটা করছে সেটার ফল এসে গতকাল পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সামনে অনেক টুর্নামেন্ট রয়েছে ও ম্যাচ রয়েছে। সেখানে তার পারফরম্যান্স দেখার জন্য এক্সাইটেড। ওর বোলিংটা ভালো হলে আমার নিজের কাছেও অনেক ভালো লাগে। যেহেতু ওই সময় আমি ওর পাশে ছিলাম। ও কি করত না করত আমি সব দেখতাম। সে কারণে তাকে পুরোনো ছন্দে দেখে ভালো লাগছে। আশা করি সে অনেক ভালো করবে এবং রাজার বেশে খেলবে।
এমকে/টিকে