সাহসি মানসিকতার কারণে বরাবরই আলোচনায় থেকেছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। ব্যক্তিজীবনেও কখনো কারো পরোয়া করেননি তিনি। বরং বাঁধন সবসময় চেয়েছেন সত্যের পক্ষে থাকতে, স্বাধীনচেতা মনোভাবকেই আঁকড়ে ধরে রাখতে।
ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থ্যানে সরব ছিলেন বাঁধন। আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধেও বরাবর আওয়াজ তুলেছেন তিনি। তবুও সম্প্রতি সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনার কারণে অভিনেত্রীকে ঘিরে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
যেসব বিতর্কের জবাব দিতেই যেন রোববার সন্ধ্যায় এক ফেসবুক স্ট্যাটাস দিলেন অভিনেত্রী। যেখানে নিজের একটি ছবি প্রকাশ বাঁধন লিখেছেন, আমাকে ভাঙতে চাইলে, আরও শক্ত হয়ে যাই।
বাঁধন তার স্ট্যাটাসে লেখেন, আমি স্বাভাবিকভাবেই একজন আবেগপ্রবণ মানুষ। জীবনে অনেক কিছু অর্জন করেছি — এবং তার জন্য আমি সব সময় আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু জীবনে যে জিনিসটি সবচেয়ে বড় অর্জন করেছি, তা কোনো খ্যাতি বা সাফল্য নয় — বরং নিজের মতো করে বাঁচার এবং সৎভাবে নিজের কথা বলার ক্ষমতা। সেটাই আমার আসল সম্পদ।
বাঁধন লিখেছেন, ‘জীবনে এমন অনেক সময় এসেছে, যখন আমাকে এমন সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, যা আমাকে আরও ক্ষমতা, সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা, স্থিতিশীলতা দিতে পারত। কিন্তু আমি বেছে নিয়েছিলাম স্বাধীনতাকে। আর একবার আপনি যখন সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ নেন — যেটা লোকে হালকাভাবে বলে, সেই ধরনের নয়, বরং যেটা আপনি হাড়ের ভেতরে অনুভব করেন — তখন আর ফেরা সম্ভব হয় না। যেমন একটি কথায় বলা হয়েছে- “যারা স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত ছিল, তারা যখন এর সামান্য স্বাদ পায়, তখন তারা পুরো স্বাধীনতাটাই চায়।” আর আমিও সেটা পুরোপুরি চাই।
অভিনেত্রীর কথায়, হয়তো এ কারণেই কিছু মানুষ আমাকে ঘৃণা করে। হয়তো তাদের আসল অস্বস্তি আমার কথায় বা কাজে নয়, বরং এ ব্যাপারে যে, আমি কাউকে আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে দিই না।
বাঁধন জানান, এ পথ সহজ ছিল না। বরং এর বিপরীত। কিন্তু এই সমস্ত বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে আমার ভেতরে একটা জিনিস তৈরি হয়েছে: কেউ আমাকে ভাঙতে চাইলে, আমি আরও শক্ত হয়ে যাই, কংক্রিটের মতো। এটা শক্তি নাকি ত্রুটি, জানি না, তবে জীবন আমাকে এটাই শিখিয়েছে।
সবশেষ অভিনেত্রী লিখেছেন, আমি অনেক ট্রমা বয়ে বেড়াই। আমি জানি PTSD কাকে বলে। ছোট্ট কোনো কিছুই মাঝে মাঝে সেটা ট্রিগার করে দেয়। এটাও আমারই অংশ — এমন এক অবাঞ্ছিত সঙ্গী, যাকে আমি চাইনি, কিন্তু যার সঙ্গে বাঁচতে শিখেছি।
এসএন