ঋণ প্রবাহ বাড়াতে নীতি সুদহার কমানোর ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের

তারল্য সরবরাহ ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে নীতি সুদহার কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, নীতি সুদহার কমানোর এ সিদ্ধান্ত আগামীকাল বুধবার (১৬ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। তারল্য ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটারি পলিসি বিভাগ নীতি সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নীতি সুদহার বা রেপো রেট ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে দশমিক ৫০ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়ে ৮ শতাংশে পুন:নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো যে টাকা ধার করবে, তার সুদহার কমবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক এবার সম্প্রসারণমূলক মুদ্রা সরবরাহের পথে হাঁটছে।

নতুন এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নীতি সুদহার করিডোরের উর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) সুদহার ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং আভার নাইট রেপো সুদহার নীতি ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, নীতি সুদহার কমানোর ফলে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তুলনামূলক কম সুদে অর্থ ধার নিতে পারে। এর ফলে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছেও ব্যাংকগুলো কম সুদে ঋণ দিতে পারে। এতে ঋণ নেওয়ার আগ্রহ বাড়ে এবং বাজারে অর্থের সরবরাহ বৃদ্ধি পায়।

তবে অর্থের সরবরাহ ও ভোগ চাহিদা বাড়লে, পণ্যের দামও বাড়তে পারে। এর ফলে মুদ্রাস্ফীতির চাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর একাধিক প্রোগ্রামে জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি কমে এলে সুদের হার কমানো হবে। তিনি আশা করছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নেমে আসবে এবং সেই সঙ্গে সুদের হারও কমানো হবে।

এদিকে ব্যবসায়ীদের দাবি ও বিভিন্ন মহলের পরামর্শে তার আগেই নীতি সুদহার কমালো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত জুনে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে, যা বিগত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২২ সালের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি পৌঁছেছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশে। এরপর গত জুনের মতো এত কম মূল্যস্ফীতি আর হয়নি। এ ছাড়া, গত চার মাস ধরে মূল্যস্ফীতি কমেছে।

গণঅভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে নিম্নমুখী প্রবণতায় থাকা বেসরকারি খাতের ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধির হার মে মাসেও আগের মাসের চেয়ে কমেছে। সবশেষ তথ্য বলছে, মে মাসে এ খাতে ঋণ ছাড়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের মাস এপ্রিলে যা ছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল শতবর্ষী কিংবদন্তি দৌড়বিদ ফৌজা সিংয়ের Jul 16, 2025
img
কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে প্রাণ হারাল ১ জন Jul 16, 2025
img
দেশে কোনো হত্যাকাণ্ডই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কিংবা সাম্প্রদায়িকতার কারণে সংঘটিত হয়নি : পুলিশ সদর দপ্তর Jul 16, 2025
কুড়িগ্রামে শহীদ পরিবারের পাশে রিজভী, জানালেন আন্দোলনের পটভূমি Jul 16, 2025
img
নিবন্ধন প্রত্যাশী দলগুলোকে ত্রুটি সংশোধনে ১৫ দিন সময় দিয়ে ইসির চিঠি Jul 16, 2025
img
জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে ১৬ জুলাই দেশের সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া-মোনাজাত Jul 16, 2025
img
পার্বত্য এলাকায় একীভূতকরণ প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে হবে : সুপ্রদীপ চাকমা Jul 16, 2025
img
রাজশাহীতে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীসহ আটক ২০ জন Jul 16, 2025
img
রাজশাহীর বাগমারায় মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারাল এক যুবক Jul 16, 2025
img
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই পুনর্জাগরণ উদযাপনে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের নির্দেশ মাউশি’র Jul 16, 2025
img
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মাঠে ছিলাম ‘ক্ষুব্ধ নারী সমাজ’ প্লাটফর্মের ব্যানারে : ফরিদা আখতার Jul 16, 2025
img
মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ইংরেজি চর্চা করা উচিত : ধর্ম উপদেষ্টা Jul 16, 2025
img
বাংলাদেশে ভারতীয় শিল্পীদের ‘নিষিদ্ধ’, জয়াকে রেড কার্পেটে? প্রশ্ন তুললেন জুঁই Jul 16, 2025
img
সুন্দরবনে দুই নৌকাসহ ৫ জেলে আটক Jul 16, 2025
img
গোপালগঞ্জ কোনো ব্যক্তি বা দলের সম্পত্তি নয়, গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের : সারজিস Jul 16, 2025
img
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিজিবির হাতে ১০টি ভারতীয় মহিষ জব্দ Jul 16, 2025
আমি হাফ পারসিয়ান হাফ বাংলাদেশী, বরিশাইল্লা মেয়ে: মেঘনা আলম Jul 16, 2025
বক্স অফিসে নতুন রেকর্ডের পথে আমির খানের ‘সিতারে জামিন পার’ Jul 16, 2025
যে কারণে ১৮ বছর ধরে খিচুড়ি খাচ্ছেন কারিনা কাপুর Jul 16, 2025
যুদ্ধে আসছে চালকবিহীন স্মার্ট ড্রোন, নাম তার ভ্যালকিরি Jul 16, 2025